ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে পদ্মার ভাঙনে নদীগর্ভে ৪শ বসতভিটা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
ফরিদপুরে পদ্মার ভাঙনে নদীগর্ভে ৪শ বসতভিটা

ফরিদপুর: ফরিদপুরের পদ্মানদী ভাঙনে অন্তত ৪শ বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের আশংকায় রয়েছে একটি বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি মসজিদ।

এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে একটি ব্রিজও। অন্যদিকে, নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ৩শ একর জমি।

জানা গেছে, জেলা সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, পাল ডাঙ্গী,  নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী, ফকির ডাঙ্গী এলাকার অন্তত ১১৪ বাড়ির বসতভিটা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। মানবেতর জীবনযাপন করছে বাড়ি-ঘর হারা মানুষগুলো। অনেকেই খোলা আকাশের নীচেও বসবাস করছেন। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ১০০ একর ফসলি  জমি।

ভাঙনকবলিত এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, গত কয়েকবছরে প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গা-জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নতুন করে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না হলে অসংখ্য বাড়ি-ঘরসহ নানা স্থাপনা পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।
এব্যাপারে ডিক্রিরচর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, আমার ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ১১৪ টি বাড়ির বসতভিটা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ১০০ একর ফসলি জমি। তবে, জেলা প্রশাসনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জমা দিলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে জেলা সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী, বাবর আলী মৃধার ডাঙ্গী ও কাইমুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার অন্তত ৩০০ বাড়ির বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই ইউনিয়নের গোলডাঙ্গী ব্রিজের অর্ধকিলোমিটার দূরে রয়েছে ভাঙন। তাই ভাঙন শংকায় রয়েছে সাড়ে তিন কোটি টাকার ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজটি। এছাড়া ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ১৮ নং চরটেপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটা মসজিদও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে ২০০ একর ফসলি জমি।  
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এব্যাপারে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।  

এব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বাংলানিউজকে বলেন, নদীগর্ভে কোনো বাড়ি-ঘর বিলীন হয়নি। তবে যখন ভাঙন দেখা দেয় তখন বাড়ি-ঘরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে বসতভিটা ভেঙেছে পদ্মায়।

ইউএনও বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার (০৮ আগস্ট) নদী ভাঙনের এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঢেউটিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে সেই তালিকা অনুসারে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।

এব্যাপারে গত সোমবার (০৭ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি প্রেসব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসানের তালুকদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ফরিদপুরে বড় ধরনের তেমন কোনো নদীভাঙন দেখা দেয়নি। এছাড়া বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ারও আশঙ্কা নেই। তবে, কিছুদিন আগে কিছু এলাকা পদ্মায় ভেঙেছিল মাননীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি ওই এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।