ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘ভোক্তা অধিদপ্তর ব্যবসাবান্ধব, ব্যবসায়ীবান্ধব নয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
‘ভোক্তা অধিদপ্তর ব্যবসাবান্ধব, ব্যবসায়ীবান্ধব নয়’

ঢাকা: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভোক্তা ও ব্যবসাবান্ধব, কিন্তু ব্যবসায়ীবান্ধব নয় বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।

তিনি বলেন, আমরা একটি সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।

ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠলে সব ব্যবসায়ী লাভবান হবেন। শুধু কতিপয় মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা ছাড়া।

সোমবার (১৪ আগস্ট) ডিমের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (ফার্ম ও করপোরেট), এজেন্ট-ডিলার ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

মতবিনিময় সভায় মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার আরও বলেন, আমরা চাই, বাজার যাতে অস্থির না হয় এবং ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমরা জানি, সরবরাহ থাকলে দাম কমে আবার সরবরাহ না থাকলে দাম একটু বাড়ে। কিন্তু হঠাৎ করে ডিমের দাম নিজেরাই একদিনে দুই টাকা বাড়িয়ে দেওয়া মেনে নেয়া যায় না। ব্যবসায় তো একটি নৈতিকতার বিষয় আছে। কারণ আপনাদের (ব্যবসায়ী) যখন লোকসান হয়, তখন একদিনে দুই টাকা লোকসান হয় না।

তিনি বলেন, আমরা বাজারে অভিযানে যাই। আমরা চাই না একজন ব্যবসায়ী বা একজন দোকানদারও জরিমানা প্রদান করুক। এখন পর্যন্ত আমরা ১০০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা আদায় করেছি। আমরা ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এ ১০০ কোটি টাকার ব্যর্থ জাতি আমরা। কারণ আমরা (ব্যবসায়ী) আমাদের ভোক্তাদের অধিকারটুকু সংরক্ষণে মনোযোগী হইনি।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্ন তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কিন্তু জনবলের সীমাবদ্ধতায় আমরা সত্যিকার অর্থে ডিমের ক্ষেত্রে সে ফোকাস দিতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আমিষের মূল চাহিদা পূরণ করছে ডিম এবং ব্রয়লার মুরগি। কিন্তু এ খাতে প্রচুর অস্থিরতা বিরাজ করছে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে। এজন্য ক্ষুদ্র খামারিদের ১৫ শতাংশের ফার্ম বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এই খাতে শৃঙ্খলা আসা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, উৎপাদক থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রিতারা যদি পাকা রশিদ ব্যবহার করেন, তাহলে আমরা তদারকি করতে পারি কত টাকায় ক্রয়-বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এ পাকা রশিদ ব্যবহার না করার কারণে দাম বাড়ার জন্য একে অন্যকে দোষারোপ করছে। এই বিশৃঙ্খলা রোধ করার বড় সমাধান হতে পারে পাকা রশিদ ব্যবহার।

এ জন্য তিনি আগামী বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে ডিম উৎপাদনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও ফার্ম এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের ডিম কেনা-বেচার সময় পাকা রশিদ ব্যবহারের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কেউ যদি ওই দিন থেকে পাকা রশিদ ব্যবহার না করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।

এ সময় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমান, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রোগ্রাম কর্ডিনেটর আহমেদ ইকরামুল্লাহ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র অতিরিক্ত মহাসচিব শাহ মোহাম্মদ আব্দুল খালেক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. শহীদুল আলম, তেঁজগাও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ, পিপলস পোল্ট্রি ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল রহমান, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান আব্দুল জব্বার মন্ডলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।