ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কিশোরগঞ্জে চা চাষে লোকসানের আশঙ্কায় চাষিরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৩
কিশোরগঞ্জে চা চাষে লোকসানের আশঙ্কায় চাষিরা ছবি: সিঙ্গাপুর

নীলফামারী: নীলফামারীর অবহেলিত উপজেলা কিশোরগঞ্জ। সেখানকার মানুষ ধান ও গমের ওপর নির্ভর না করে শুরু করেন আলুর আবাদ।

সেই আবাদে সুফল পান উপজেলার মানুষ। সেই থেকে আলু আবাদ করে প্রতিবছর বেশ লাভবান হয়ে আসছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

এবার কৃষকরা নতুন ফসল চা চাষে এগিয়ে আসেন। তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন চা বোর্ডের সহযোগিতায় এ উপজেলায় চা চাষের উদ্যোগ নেয়। চাষিরাও তামাক পরিহার করে চা চাষে এগিয়ে আসেন।

কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এক সময় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ধান ও আলু বাদ দিয়ে চা চাষে আগ্রহী হন চাষিরা।   চাষিদের পরিচর্যায় তামাকের বাগানে দেখা যায় সবুজ চায়ের হাসি। তবে তদারকির অভাবে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা সম্ভাবনার সব দিক পর্যালোচনা করে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাটিকে চা চাষের জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী মনে করেন। এরপর ২০১৪ সালে ছোট পরিসরে উপজেলা কৃষি অফিসের সামনের জমিতে চা গাছের চারা রোপণের মধ্যে দিয়ে নীলফামারীতে চা চাষের সূচনা হয়। তারপর চা বোর্ডের নর্দান বাংলাদেশ টি ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট ২০১৭-১৮ সালে পুনরায় বেশি চা চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করণের কাজ শুরু হয় কিশোরগঞ্জে। এতে অনেকে এগিয়ে আসেন। কিন্তু প্রকল্পটি বন্ধ হওয়ার পর চা বোর্ডের সরাসরি তদারকির অভাবে সম্ভাবনায় কিছুটা ধীরগতি আসে। ২০২১ সালে প্রজেক্টের কাজ শেষ হওয়ার কারণে তদারকির অভাবে অনেক চাষি পিছিয়ে যান।

চা চাষি মো. রোকন ইবনে আজিম বলেন, চা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। কারণ একবার চা চারা রোপণের পর যদি সেগুলো সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে তাহলে ৯০ বছর আর সেই জমিতে চারা লাগাতে হয় না; শুধুমাত্র পরিচর্যা ছাড়া। বছরে কমপক্ষে সাতবার চা পাতা তোলা সম্ভব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও দুই থেকে তিনবার তোলা সম্ভব। তবে এতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে চা পাতা প্রোসেসিং সেন্টার কিশোরগঞ্জে না থাকা। ফলে চা পাতা বিক্রির জন্য পঞ্চগড়ের প্রোসেসিং কারখানার অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। চা পাতা বিক্রির জন্য গাড়ি আশার আগ পর্যন্ত সতেজ রাখা ছোট চাষিদের পক্ষে কষ্টের ব্যাপার। তবে চা চাষে এলাকার শ্রমিকরা কাজ পেয়েই খুবই খুশি।

বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আমীর হোসেন বলেন, নীলফামারীতে চা চাষের ধীরগতি হওয়ার কারণ হচ্ছে এখানে চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা না থাকা। দূর থেকে পাতা আনতে গিয়ে অনেক সময় তা নষ্ট হওয়ায় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন চাষিরা।

তিনি আরও বলেন, যদি স্থানীয় বিত্তবান ব্যক্তি বা উদ্যোক্তা কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসেন তাহলে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দেব।

নীলফামারী-৪ আসনের (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ অংশ) জাতীয় সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান বলেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে এখন প্রায় ৮০ একর জমিতে চা চাষ হয়। এ উপজেলায় প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠলে চা চাষে এখানে দ্রুত প্রসার ঘটবে বলে আশা করা যায়।

তিনি উল্লেখ করে বলেন, বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুর একটি উপজেলা শহর হলেও সেখানে ৩৮টি ব্যাংক রয়েছে কিন্তু কিশোরগঞ্জে উল্লেখ করার মতো কোনো ব্যাংক নেই। এছাড়া এ উপজেলায় কোনো শিল্প-কল কারখানা গড়ে উঠেনি। ফলে কৃষির ওপর নির্ভর করে এখানকার লোকজনকে চলতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩

আরএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।