ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে জিম্মি বোরো চাষিরা

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩
ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে জিম্মি বোরো চাষিরা

বরগুনা: বরগুনায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বোরো ধান চাষিরা। তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাজারদরের চেয়ে কম মূল্যে ধান বিক্রি করতে বাধ্য করছেন।

ফলে ভালো ফলনের পরও দাম না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন চাষিরা।

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বদরুল আলম জানান, এ বছর জেলায় ৯ হাজার ৭৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩ হাজার ১৫ হেক্টর, তালতলীতে ৩ হাজার, আমতলীতে ১ হাজার ৯০০, বামনায় ৪৬০, বেতাগীতে ৩৫৩ এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।

তিনি জানান, গত বছর ৮ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হলেও এ বছর ৮০৮ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। আর এবারে বিঘাপ্রতি ৩৩ থেকে ৩৬ মণ ধান হয়েছে।

কৃষকরা জানান, সপ্তাহের শুরু থেকেই বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে। প্রথমে ধানের মণ ৯০০ টাকার বেশি থাকলেও গত বুধবার থেকে দাম কমে বর্তমানে ৮২০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই-তিন দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা দাম কমে গেছে।

সদর উপজেলার লবণগোলা এলাকার কৃষক আবদুল হাকিম জানান, কৃষি বিভাগের সহায়তায় এ বছর তিনি ৮০ শতাংশ জমিতে ব্রি৭৪ জাতের বোরো ধান চাষ করেছেন। জমি চাষ, শ্রমিক খরচ, সেচ, সারসহ তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে আরও ২০ হাজারসহ মোট ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ওই জমিতে তিনি পেয়েছেন ১০০ মণ ধান। প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকা করে বিক্রি করলে মাত্র ৮০ হাজার টাকা পাবেন। ৯০০ টাকা করে বিক্রি করতে পারলেও অন্তত খরচ উঠতো।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আমাদের ধানের দাম কমিয়েছেন। আমরা এর প্রতিকার চাই।

সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা এলাকার কৃষক পলাশ বলেন, ধান চাষ করে এবার লোকসান গুনতে হবে। কারণ ধানের দাম তুলনামূলক অনেক কম। এভাবে চলতে থাকলে এই পেশা থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই।

বরগুনা পৌর বাজারের মেসার্স মুন্সি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী কবির মুন্সি জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণ প্রতি ধানের দাম কমেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বাজারে ভেজা ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, আর শুকনা বিক্রি হচ্ছে ৮২০ টাকায়।

বরগুনা বাজারের পাইকার মো. লিটন মিয়া বলেন, আমরা সিন্ডিকেট করিনি। মোকামে ধানের চাহিদা কমেছে তাই দাম কম। আমরা যেমন দাম পাই, তেমনই কৃষকের কাছ থেকেও কিনি।

বরগুনা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম কবির হাওলাদার বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং করে সিন্ডিকেট পেলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বদরুল আলম বলেন, এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করবো। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পান আমরা সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।