ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গৃহবধূকে পাচারের চেষ্টা, সাতক্ষীরা সীমান্তে দুই পাচারকারী আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩
গৃহবধূকে পাচারের চেষ্টা, সাতক্ষীরা সীমান্তে দুই পাচারকারী আটক

নাটোর: ভালো বেতনে চাকরিসহ নানা প্রলোভনে নাটোর থেকে ভারতে পাচারকালে সাতক্ষীরা থেকে এক গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৫)। একই সঙ্গে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপহরণের মূলহোতা মো. শাহজাহান (৩০) ও সহযোগী মো. কবির হোসেনকে (৩৮) আটক করা হয়েছে।

সেসময় নগদ ভারতীয় রুপি ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়। এর আগে গোয়েন্দা তথ্য ও বিশেষ প্রযুক্তির ভিত্তিতে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া থানাধীন সীমান্তবর্তী সোনাবাড়িয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করে র‌্যাব-৫, সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্পের একটি অপারেশন দল।

এতে নেতৃত্ব দেন ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক, মেজর, আশিকুর রহমান ও কোম্পানি উপ-অধিনায়ক, সহকারী পুলিশ সুপার, মো. নুরল হুদা এবং যশোর, র‌্যাব-৬ সিপিসি-৩ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। আটক শাহজাহান যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার মশ্বিমনগর গ্রামের মো. সোবহান আলী সরদারের ছেলে ও কবির হোসেন একই উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের মো. কাদের সরদারের ছেলে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা শাহজাহান ছোট থাকা অবস্থায় তার মা তাকে নিয়ে ভারতে চলে যান। ছয় বছর আগে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং যশোর মনিরামপুরে তার বাবা সোবহান আলীর কাছে বসবাস শুরু করেন।

মূলত তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আকৃষ্ট করেন এবং সেই মেয়েদের ভারতে পাচার করে মোটা অংকের টাকা আয় করে থাকেন। এই কাজে তাকে তার বোন জামাই (সহযোগী আসামি) মো. কবির হোসেনসহ আরও অনেকেই সহযোগিতা করে থাকেন বলেও জানা যায়। এছাড়াও তার ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশেরই নাগরিকত্ব থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি  দিয়ে এ কাজ করা সহজ ছিল।

মামলার ভিকটিম একজন বিবাহিতা নারী। সাত বছর আগে পারিবারিকভাবে ভিকটিমের সঙ্গে নাটোর সদর থানাধীন জনৈক ওয়াসিম আকরামের বিয়ে হয়। দুই মাস আগে ভিকটিমের সঙ্গে অপহরণ চক্রের মূলহোতা শাহজাহানের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকেই শাহজাহান ভিকটিমকে ভালো বেতনে চাকরিসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতেন। বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কৌশলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করার সিদ্ধান্ত নেন।

এ অবস্থায় গত শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে ভিকটিম বাজারে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হলে শাহজাহান অটোরিকশায় করে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী ওয়াসিম আকরাম (২৮) বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। অপহরণের পর থেকেই র‌্যাব-৫ ভিকটিমকে উদ্ধার এবং আসামিদের আটকের জন্য অভিযান শুরু করে। অবশেষে মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া থানাধীন সীমান্তবর্তী সোনাবাড়িয়া এলাকা থেকে আটক করে র‌্যাবের একটি অপারেশন দল। পরে আজ সকালে উদ্ধারকৃত ভিকটিম ও অপহরণ চক্রের মূলহোতা শাহজাহান ও কবির হোসেনকে নাটোর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব-৫, সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক, মেজর, আশিকুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ এতথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, দুপুরের দিকে আটক হওয়া ওই দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩
আরএ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।