ঢাকা: নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতি শাখার প্রধান মুনতাসীর বিল্লাহসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৩)।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- দিনাজপুরের কেরামত আলীর ছেলে মুনতাসীর বিল্লাহ (৩৬), রিয়াজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল মালেক (৩৩), মৃত আব্দুস সালামের ছেলে সাব্বির হোসেন (২০) ও ঠাকুরগাঁও সদর এলাকার মহসীন আলীর ছেলে মো. ইয়াছিন (১৭)।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুরে অস্থায়ী সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদার মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে তামিম আল আদনানী, হারুন ইজহার, গুনবীসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক নেতার বক্তব্য শুনে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে ওই সংগঠনে যোগদান করেন। পরে তারা উত্তরাঞ্চলে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সরাসরি দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালকের দাবি, গ্রেপ্তার জঙ্গি সদস্যরা ধর্মভীরু মুসলমানদের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে ভুল বুঝিয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করতেন। এছাড়া তথাকথিত জিহাদের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করে তোলার পাশাপাশি তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতেন।
এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তারা উত্তরাঞ্চলে সংগঠনের কার্যক্রম প্রসারিত করার লক্ষ্যে মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতেন বলে জানিয়েছেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার মুনতাসীর বিল্লাহ সংগঠনটির উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি টেক্সটাইল বিষয়ে ছয় মাস অধ্যয়নের পর পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে এলাকায় হিজামার ব্যবসা শুরু করেন। ২০২১ সালে আনসার আল ইসলামের শীর্ষস্থানীয় নেতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগ দেন। অন্যদিকে গ্রেপ্তার ইয়াছিন এসএসসি পাস করে ঠাকুরগাঁও এলাকায় মধুর ব্যবসা করতেন। তিনি ২০২২ সালে মুনতাসীরের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন।
এছাড়া গ্রেপ্তার আব্দুল মালেক আগে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে কুক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিন বছর আগে দিনাজপুর শহরে ফিরে এসে চাংপাই চাইনিজ নামে একটি ফুড কার্ডের ব্যবসা শুরু করেন। ২০২১ সালে মুনতাসীরের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং আনসার আল ইসলামের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। অপর গ্রেপ্তার সাব্বির মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করে দিনাজপুরের বিরলে ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। তিনি ২০২২ সালে মুনতাসীরের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত এ জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩
আরবি