ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাড়ির চারদিকে দেয়াল, অবরুদ্ধ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার বোন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
বাড়ির চারদিকে দেয়াল, অবরুদ্ধ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার বোন

খুলনা: খুলনার মহেশ্বরপাশা (বণিকপাড়া) এলাকায় একটি পরিবারের বসতঘরের চারপাশে দেয়াল তৈরি করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগে ওই বসতঘরের তিন দিকে দেয়াল ছিল।

এখন একমাত্র বাইরে যাওয়ার রাস্তার দিকেও মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া নিউ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে শহীদ সিপাহী আশরাফ আলী মোল্যার বোনের পরিবার।

ভুক্তভোগী আক্তারুননেছা ওই এলাকার মৃত গাজী মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী এবং ওই শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার মেঝ বোন ও তার ওয়ারিশ।

এদিকে ভুক্তভোগী বিভিন্ন দপ্তরে অবরুদ্ধ বাড়ি থেকে চলাচলের জন্য রাস্তার আবেদন করেও কোনো সুফল মিলছে না।

ভুক্তভোগী আক্তারুননেছা বলেন, বিগত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে আমি মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া নিউ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া বাড়িতে বসবাস করছি। আমার উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে বিভিন্ন ইমারত/বসতঘর প্রাচীরসহ নির্মিত হয়েছে এবং পশ্চিম পাশে ওই বিদ্যালয় অবস্থিত। আমার বসতবাড়ি থেকে সরাসরি রাস্তার কোনো সংযোগ পথও নেই এবং এতদিন স্কুল উন্মুক্ত থাকায় আমরা স্কুলের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ পাশের রাস্তায় চলাচল করতাম। সম্প্রতি স্কুলের প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয়েছে এবং নির্মাণ সম্পন্ন হলে আমার বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তাই আর থাকবে না।

আক্তারুননেছার ছেলে মো. তারিকুল ইসলাম চয়ন বলেন, ১৯৬০ সালে আমরা জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে মহেশ্বরপাশা এলাকায় বসবাস শুরু করি। স্কুল মাঠের পাশ দিয়ে একটি রাস্তা দিয়ে আমরা মেইন সড়কে যাতায়াত করতাম। সম্প্রতি কোনো মাপ ছাড়াই স্কুল কর্তৃপক্ষ সীমানা প্রাচীর তৈরি করা শুরু করেছে। তারা সেই রাস্তাটি স্কুলের সীমানার মধ্যে নিয়ে গেছে। বাড়ি থেকে চলাচলের একটিই রাস্তা ছিল। কিন্তু ওই বিদ্যালয় আমার বাড়ির সামনে দেয়াল দেওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আমার বড় বোন ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগী এবং আমার মা ক্যানসারের রোগী। কেউ অসুস্থ হলে কোলে করে হাসপাতালে নেওয়ারও কোনো অবস্থা নেই।

তিনি আরও বলেন, শহীদ সিপাহী আশরাফ আলী মোল্যা অবিবাহিত ছিলেন। যার কারণে তার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আমার মা পাচ্ছেন। তিনিই মামার ওয়ারিশ। আমরা মানবিক কারণে হলেও আমাদের জন্য রাস্তা রেখে প্রাচীর নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আবেদিন বলেন, যে জায়গা দিয়ে স্কুলের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে তার পুরোটাই স্কুলের জমি। স্কুল কর্তৃপক্ষ অন্যের জমিতে দেয়াল নির্মাণ করছে না।

এভাবে দেয়াল নির্মাণ হলে একটি বাড়ি পুরো অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা চলাচলের পথ রাখার জন্য দাবি করেছেন তাদের এবং স্কুলের সম্পত্তি এখন অর্পিত সম্পত্তি। ফলে বদলের মাধ্যমেও যদি পথ রাখার সুযোগ থাকতো তাহলে আমরা তাই রাখতাম। যেহেতু উভয় সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানাধীন নয় সেহেতু এখানে আমাদের করার কিছু নেই। তারপরও একটি বাড়ির লোকজন যেহেতু অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে সেটি বিবেচনায় নিয়ে আমরা এলাকার সবাই বসে কী করা যায় সেটি আলোচনা করবো।

এ বিষয়ে স্কুলটির প্রধানশিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, স্কুলে বাউন্ডারি নির্মাণের বিষয়টি জানেন পরিচালনা পর্ষদের নেতারা। আমরা শুধুমাত্র দেখভাল করে থাকি। জায়গা জমি নিয়ে কারো সঙ্গে বিরোধ থাকলে সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।