ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এক মাসে আরও ৪০ নিখোঁজকে উদ্ধার করলেন ‘সেরা’ এসআই মোস্তাফিজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৩
এক মাসে আরও ৪০ নিখোঁজকে উদ্ধার করলেন ‘সেরা’ এসআই মোস্তাফিজার

ঢাকা: উঠতি বয়সে কিশোর-কিশোরীরা তাদের পরিবারকে না জানিয়ে নানা কারণে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। তাদের খুঁজে না পেয়ে পরিবারের তরফ থেকে থানায় করা হয় নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি।

সেপ্টেম্বর মাসে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে এরকম প্রায় ৪০ জন নিখোঁজ হয়। প্রতিটা ঘটনায় জিডির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তে নেমে নিখোঁজদের উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় যাত্রাবাড়ী থানা। উদ্ধারকরাদের মধ্যে সংখ্যায় বেশি কিশোর কিশোরীরা। এ ছাড়াও র‍য়েছে হারিয়ে যাওয়া শিশুসহ বয়স্ক মহিলা।

গত সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে ৪০টি জিডির তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশ কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজার রাহমান। তিনি জিডি গুলোর তদন্ত কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে নিখোঁজদের তাদের অবস্থান নিশ্চিত করেন। পরে তাদের উদ্ধারে ছুটেছেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকেও ভিকটিমদের উদ্ধার করা হয়েছে।  

উদ্ধারের পর পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভিকটিমদের তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলানিউজের সঙ্গে উদ্ধার অভিযান নিয়ে আলাপচারিতায় মোস্তাফিজার রাহমান জানান, ঘর ছাড়া ৪০ জনের মধ্যে অধিকাংশই কিশোর কিশোরী। এছাড়া হারিয়ে যাওয়া তিন বছরের এক শিশুকে রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে উদ্ধার করার পাশাপাশি বয়স্ক একজনকে মহিলাকে রাজধানীর পাশের একটি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি জানান, বেশির ভাগ কিশোরী ও তরুণীদের বয়স ১২-২৫। এদের অনেকে টিকটকে জনপ্রিয় হতে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। আবার প্রেমের সম্পর্কের পাশাপাশি কেউ কেউ পরিবারের সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে পালিয়েছে।

তিনি বলেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আনন্দের বিষয়টি ছিল অন্যরকম যা বলে বোঝানো যাবে না।
 
পুলিশ অফিসার মোস্তাফিজার রহমান, কাজের অবদানের জন্য বিভিন্ন সময় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গণিত  বিভাগ থেকে অনার্স- মাস্টার্স করেছেন। পুলিশ বিভাগের চাকরিতে আছেন ছয় বছর হলো। এর মধ্যে গত একবছর ধরে তিনি যাত্রবাড়ী থানায় কর্মরত আছে। এ সময়ে ৫০ টির বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন তিনি। বর্তমানে আরো ১৩ টি মামলা তার অধীনে তদন্তাধীন। এর আগে রাজশাহী র‍্যাব-৫ কর্মরত ছিলেন। সে সময়েও বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণে শ্রেষ্টত্বের প্রমাণ দিয়েছেন তিনি।

চলতি বছর ডিএমপির ৫০ থানার মধ্যে মার্চ ও মে মাসে দুইবার ভিকটিম উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ অফিসার হন মোস্তাফিজার । এজন্য ডিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে সম্মাননাও পেয়েছেন।  

এদিকে যাত্রাবাড়ী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিখোঁজের পর ভুক্তভোগীর পরিবার সদস্যরা যাত্রাবাড়ী থানায় এ সংক্রান্তে জিডি করে। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত নেমে ৪০ জনকে উদ্ধার করেন যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মোস্তাফিজার রাহমান। এসব ঘটনা বন্ধে আমাদের পক্ষ থেকে প্রায়ই যাত্রাবাড়ী বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে উঠান বৈঠক করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আমাদের এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  সেখানে কিশোর-কিশোরীদের ঘরছাড়াসহ মাদক, ইভটিজিংয়ের মতো বিষয়ে সচেতনতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

 

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৩
এজেডএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।