গাইবান্ধা: ভারী বৃষ্টি-উজানের ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তার পানি ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
হু-হু পানি বাড়ায় দ্রুত বিপৎসীমা ছাড়িয়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম সরকার লেবু, উপজেলা প্রকৌশলী মো. শামসুল আরেফীন খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মণ্ডল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. খোকন রানা, বেলকা ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ, তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল আলম সরকার রেজা, কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনজু মিয়া প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ভারতের সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সম্ভাব্য বন্যার হাত থেকে তিস্তা নদী বেষ্টিত সাতটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এছাড়া তিস্তা নদী বেষ্টিত চর ও নিচু অঞ্চলের মানুষকে দ্রুত উঁচু স্থানে সরিয়ে যাওয়ার জন্য বিকেল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় মসজিদ থেকেও মাইকিং চলছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দ্রুত পানি বাড়তে থাকায় বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যাবার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে তিস্তা নদীর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী তিস্তা নদী কাউনিয়া পয়েন্টের পানি সমতল ২৮.১৫ মি. (বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার নিচে), যা বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভোর নাগাদ বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে এবং পরবর্তীতে সর্বোচ্চ পানি সমতলের (৫২.৮৪ মি) কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।
উপজেলার নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হচ্ছে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, বসতবাড়ি, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২৩
এএটি