ঢাকা, শনিবার, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ০১ মার্চ ২০২৫, ০০ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

আত্মপ্রকাশ করেই জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবি জানাল ‘ব্রিগেড ৭১’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৩
আত্মপ্রকাশ করেই জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবি জানাল ‘ব্রিগেড ৭১’

ঢাকা: একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার পক্ষের যুব ও তরুণ সমাজের ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত ‘ব্রিগেড ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে।  

আত্মপ্রকাশ করেই জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে আদালতের রায়ের আলোকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

একই সঙ্গে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে ‘ঘাপটি মেরে থাকা’ জামায়াতে ইসলামীর কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া এবং অবিলম্বে জাতীয় সংসদ ভবন অঙ্গন থেকে সব বিতর্কিত ব্যক্তিদের কবর অপসারণেরও দাবি জানান তিনি।

লিখিত বক্তব্যে রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘ব্রিগেড ৭১’ এর মূল দাবি হচ্ছে বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক কোনো শক্তিকে রাজনৈতিক অধিকার দেওয়া যাবে না। এছাড়া দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও আইনগতভাবে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোনো কওমি মাদরাসা এগুলো পালন করে না। এটা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান দেখায় না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের লিখিত বক্তব্যে রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকাল পার করছে। একাত্তরের পরাজিতরা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনিরা ঘাপটি মেরে বসে আছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে। গোপনে সংগঠিত হচ্ছে মানবতা বিরোধীদের বিচারের প্রতিশোধ নিতে। আমরা আশঙ্কা করছি সুযোগ পেলে ২০০১-এর নির্বাচন পরবর্তী ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, হত্যার মত নৃশংসতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে তারা। এই অপশক্তি এবং তাদের অনুসারীরা সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদের ক, খ, গ এবং ঘ সরাসরি লঙ্ঘন করছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশের সংবিধান, রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি যথা বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ছুঁড়ে ফেলে দেওয় হয়। সংবিধানকে পাকিস্তানের আদলে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়া হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মীয় দলগুলোকে অবাধ রাজনৈতিক করার সুযোগ দেওয়া হয়। সামরিক শাসকদের আমলে তারা মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও হয়। শুনতে এবং দেখতে অবাক লাগে যে, স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আছে। তাই আগামীতে এদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং জাতীয় সংসদের বিরোধী দলে যাতে স্বাধীনতা বিরোধী বা তাদের মদদদাতা রাজনৈতিক দল ভূমিকা রাখতে না পারে সে জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

গত ১৫ বছর ধরে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি রাষ্ট্রপরিচালনা করছে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেনি; এর পেছনে কোনো কৌশল আছে বলে মনে করেন কিনা? একজন সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, এই বেদনা আমাদের মধ্যে আছে বলেই আজ আমরা একত্রিত হয়েছি এবং সরকারের কাছে আমরাও দাবি জানাচ্ছি। এবার আমরা স্বাধীনতার পক্ষের সব রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের দাবির কথা জানিয়ে দেব। পাশাপাশি সারা দেশে আমারা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সফর করব।

সংগঠনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরকারের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ‘ব্রিগেড ৭১’ এর সংগঠক সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তাফা হোসাইন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিতুল ইসলাম রাজু, জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ, লেখক আনোয়ারুল আলম খান, শহীদ সাংবাদিক স ম আলাউদ্দিনের কন্যা সাংবাদিক লায়লা পারভীন সেজুঁতি, চৌধুরী মোহাম্মদ কায়সার রাশেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম খান, জীবন কৃষ্ণ সাহা, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের শাহানা জেসমিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২৩
ইএসএস/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।