ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মেরে ভারতে পাঠানোর হুমকি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৩
বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মেরে ভারতে পাঠানোর হুমকি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার  অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীর হোসেন

পিরোজপুর: জেলার ইন্দুরকানীতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে।  

ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ফেলে দেবে এবং ভারত পাঠিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন তিনি।

ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।  

ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীর হোসেন অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে জুতা নিয়ে তেড়ে আসেন।  

উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের সভা কক্ষে গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে ঘটনাটি ঘটে।  

লাঞ্ছনার শিকার ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন পরিতোষ চন্দ্র হালদার। তিনি ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য।

অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন একই ইউনিয়ন পরিষদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্রাক কর্তৃক আয়োজিত বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ সমন্বয় সভা শেষ হয়। এসময় পরিষদের সব ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে আলমগীর হোসেন হঠাৎ বশির মৃধার নাম কেন জেলেদের বিশেষ ভিজিএফের চালের তালিকায় রাখা হয়নি তা জিজ্ঞেস করেন পরিতোষ চন্দ্রকে। প্রশ্নের কোনো জবাব না দেওয়ায় পরিতোষ চন্দ্রকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন আলমগীর। এসময় আলমগীর তার জুতা খুলে পরিতোষ চন্দ্রকে মারার জন্য তেড়ে ওঠেন। এমনকি তাকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ফেলে দেবে এবং ভারত পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।  

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদার বলেন, আলমগীর আমাকে যেভাবে লাঞ্ছিত করেছে তাতে আমার আর কাউকে মুখ দেখানোর উপায় নাই। এই ঘটনায় যদি সঠিক বিচার না হয় তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহীন হাওলাদার।  

তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি পাশের কক্ষে ছিলাম। আলমগীর হোসেনের হাঁকডাক শুনে সভাকক্ষে এসে তাকে থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। এর আগেও তিনি আমার পরিষদের একাধিক সদস্য ও গ্রাম পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করেছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীর হোসেন বলেন, পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে জুতাপেটা করতে চাইনি। অহেতুক আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। মেম্বাররা মানুষের কাছ থেকে চাল দেওয়ার কথা বলে টাকা নিলে মানুষ আমাদের জুতা দিয়ে পেটাবে বলেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, পরিতোষ চন্দ্র হালদার বৃহস্পতিবার রাতে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ওসি আল মামুন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।