ঢাকা: একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল অথবা দুষ্কৃতকারীরা দেশের কয়েকটি স্থানে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা তৈরির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছিল, ওই দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে তাদের অপচেষ্টা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।
দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা চলমান রয়েছে উল্লেখ্য করে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এসব ব্যক্তি, দুষ্কৃতকারী যারা স্বার্থান্বেষী মহলের মাধ্যমে এ অপচেষ্টা করেছিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো নাশকতা বা জঙ্গি হামলার তথ্য নেই। আমরা নিয়মিত গোয়েন্দা কার্যক্রম ও টহল অব্যাহত রেখেছি।
তিনি বলেন, একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল আছেন যারা গুজব ছড়িয়ে প্যানিক সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। আগেও দেখা গেছে যে, গুজব ছড়িয়ে নাশকতার চেষ্টা করেছে। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাদের র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, গত ২০ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে। এ শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে গত ১৬ অক্টোবর থেকে র্যাব সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে স্লোগান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শারদীয় দুর্গাপূজা যেন নিরাপদে উদযাপন করতে পারি সেজন্য আমরা দেশব্যাপী বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এসব মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৪ হাজারের বেশি র্যাব সদস্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে কাজ করছেন। ৩ শতাধিক টহল টিম পরিচালনা করা হচ্ছে। যাতে করে আমাদের এ উৎসবকে কোনো দুষ্কৃতকারী বা স্বার্থান্বেষী মহল বানচাল করতে না পারে।
আমরা বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট স্থাপন করেছি। বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। তারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে সুইপিং করা হচ্ছে। সারাদেশে যেখানে প্রয়োজন সেখানে সুইপিং করা হচ্ছে।
যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য র্যাবের স্পেশাল ফোর্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ডগস্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হচ্ছে। র্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সবার সার্বিক সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত সফলভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি।
খন্দকার আল মঈন বলেন, আমাদের প্রতিটি এলাকায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে যেসব পূজা মণ্ডপ রয়েছে, সেখানকার পূজা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে যা যা করা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইউনিট প্রধানরা নিয়মিত পূজামণ্ডপগুলো পরিদর্শন করছেন। র্যাব সদর দপ্তর থেকে আমরা সমন্বয় করে সারাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
পূজা কমিটিকে ধন্যবাদ দিয়ে কমান্ডার মইন বলেন, পূজার বিরতিকালে দেখেছি স্বার্থান্বেষী বা সুযোগ সন্ধানী মহল বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা বা অপচেষ্টা করেন। পূজা কমিটিকে ধন্যবাদ, পূজার বিরতিকালে বা মধ্যরাতে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করছেন। আমরা সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি।
যেসব নারী পূজামণ্ডপে আসছেন, তারা যেন কোনোভাবে ইভটিজিংয়ের স্বীকার না হয় সেজন্য র্যাব গোয়েন্দা সদস্যরা সাদা পোশাকে কাজ করছে। বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করছে।
পূজা উদযাপন কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে একটা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ