ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফিলিস্তিনিদের জন্য সেবা খাত খুলে দেওয়ার দাবি প্রধানমন্ত্রীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৩
ফিলিস্তিনিদের জন্য সেবা খাত খুলে দেওয়ার দাবি প্রধানমন্ত্রীর সংসদে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

ঢাকা: নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার, ওষুধ কোনো কিছুই দিতে দিচ্ছে না। খাদ্য-পানি সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক যন্ত্রণা দেওয়া হচ্ছে।

দেশটিতে অন্তত সেবা খাত খুলে দিতে দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ফিলিস্তিনের মানুষ যাতে সেবা নিয়ে বাঁচতে পারে সে দাবি জানানোর পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বের সবাইকে এক হয়ে দেশটিতে চলমান অপরাধ বন্ধের আহ্বানও জানান সরকার প্রধান।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েল কর্তৃক পরিচালিত নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আনা প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ দাবি জানান। আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, অনবরত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী-শিশু তারা সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা অনেক মানবাধিকারের কথা শুনি। কিন্তু ফিলিস্তিনের জনগণ অমানবিক কষ্টে জীবন যাপন করছে। ইসরায়েলের আক্রমণ বিশেষ করে নারী-শিশুর ওপর হামলা হচ্ছে। সবচেয়ে জঘন্য কাজ হচ্ছে আল আহলে আল আরাব ব্যাপটিস হাসপাতালে- যেখানে মায়েরা মনে করেছিল সন্তানদের নিয়ে সেখানে নিরাপদে থাকবে। তারা চিকিৎসাধীন ছিল- আর সেখানেই বিমাল হামলা, বম্বিং এবং নারী-শিশুকে হত্যা করে। জঘন্য একটা ঘটনা ঘটিয়েছে এর নিন্দা করার ভাষা নেই। হাসপাতালে হামলার নিন্দা জানাচ্ছি।

সরকার প্রধান বলেন, ফিলিস্তিনের শিশুরা বড় হলেই নাকি যোদ্ধা হয়ে যায়- তাই তাদেরকে শেষ করে দেওয়া। গর্ভবতী নারীদের হত্যা করা হয়েছে। আমি যেখানেই গিয়েছি- এর প্রতিবাদ করেছি। এ ধরণের ঘটনা আমরা কখনই মেনে নিতে পারি না।

১৯৯৫ সালে হেবরনে ইসরায়েলি হামলার ঘটনাটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন আমরা বিরোধী দলে ছিলাম। আমরা সংসদে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। বিএনপি ক্ষমতায় ছিল- আলোচনা করতে দেয়নি। আমরা সংসদ থেকে বেরিয়ে চলে গিয়েছিলাম। আমরা ইতোমধ্যে শুকনো খাবার পাঠিয়েছি। এসব আমরা মিশরে পৌঁছে দিয়েছি, তারা পৌঁছে দেবে।

সব থেকে দুর্ভাগ্য হলো- খাবার, ওষুধ কোনো কিছুই দিতে দিচ্ছে না। যেকোনো যুদ্ধে হাসপাতাল নারী, শিশুর ওপর এভাবে হামলা হয় না। আজকে খাদ্য, পানি সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক যন্ত্রণা দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই যে অন্তত সেখানে সেবা খাতটা খোলা হোক; যাতে ওখানকার মানুষগুলো বাঁচতে পারে। সেবা খাতটাই তার বন্ধ করে দিয়ে কষ্ট দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকারের কথা বলা হয়; অথচ এখানে যে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এই মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন- হত্যা হলে আমরা তার প্রতিবাদ করি, এটাই আমাদের নীতি। আমাদের নীতি সবার সাথে বন্ধুত্ব কারও সাথে বৈরিতা নয়। , কিন্তু ইসরায়েল যে ঘটনা ঘটাচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবি- সেটা যেন মেনে নেওয়া হয়। তাদের রাষ্ট্র তারা যেন ফিরে পায়। আমার আহ্বান থাকবে মুসলিম বিশ্বের সবাই এক হয়ে যেন এই অন্যায়-অপরাধের প্রতিবাদ করে এবং ফিলিস্তিনিরা যেন ন্যায্য অধিকার ফিরে পায়।

এ আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, দলটির চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙা, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজ ভাণ্ডারি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৩
এসকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।