ঢাকা: চলতি বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১২ হাজার ৪১৮ জন।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে সারা বছর জুড়েই ডেঙ্গুরোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৮৪৪ জন এবং সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৫৮১ জন মারা যান।
চলতি বছরের সাত নভেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৩ জন। এর মধ্যে ঢাকাতে এক লক্ষ এক হাজার ৯৬১ জন ও সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) এক লাখ ৮১ হাজার ৬৩২ জন।
গত মাসের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গিয়েছিল এক হাজার ৩৪৮ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন।
বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটলেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ইতোপূর্বে ডেঙ্গু রাজধানী কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
নভেম্বর মাসেও ডেঙ্গুতে কেন এত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে জানতে চাইলে হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ডেঙ্গু বাংলাদেশে অপ্রতিরোধ্য গতিতে মানুষকে আক্রান্ত করছে এবং ডেঙ্গুর আক্রমণে অনেকে মারা যাচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে এবং আক্রান্ত হচ্ছে তার একটা সংখ্যক রিপোর্ট হচ্ছে, যেটা আমাদের জানানো হয়। এর বাইরেও আক্রান্ত ও মৃত্যু থাকে।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যু প্রতিরোধ যোগ্য। প্রতিরোধ যোগ্য মৃত্যুতে একটা মানুষও যদি মারা যায় সেটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। ফলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যু হওয়াটা অগ্রহণযোগ্য।
এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ইতোপূর্বে বড় শহর এবং রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কিছু কার্যক্রম চলমান ছিল। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক ডামাঢোলের মধ্যে কে ক্ষমতায় আসবে, আর কে থাকবে এই টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে দেশে ডেঙ্গু রয়েছে এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মানুষ যে মারা যাচ্ছে সেই বিষয়টাই যেন আমরা ভুলতে বসেছি। ফলে ডেঙ্গু প্রতিরোধের কার্যক্রম কোথাও নেই। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, মারাত্মক একটি সংক্রামক ব্যাধি, যেটা প্রতিরোধ যোগ্য, আমরা একেবারে নিষ্ক্রিয় থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম প্রকৃতির হাতে ছেড়ে দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২৩
আরকেআর/আরএ