ঢাকা, রবিবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

‘স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে শুনি আমার মেয়েটাও মারা গেছে’ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৩
‘স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে শুনি আমার মেয়েটাও মারা গেছে’ 

পটুয়াখালী: ডেঙ্গুতে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানেই স্ত্রী ও মেয়েকে হারালেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের নেহালগঞ্জ গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল ইসলাম।

পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় দুই স্বজনকে হারিয়ে দিশেহারা তিনি।

 কান্নারত কণ্ঠে এ হতভাগা জানালেন, স্ত্রী ছালমা বেগমের (৪০)  লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে শুনতে পান তার ছোট মেয়ে ১২ বছর বয়সী সাদিয়াও মারা গেছে।  

মা-মেয়েকে একসঙ্গেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকাজুড়ে।

আক্রান্ত হয়ে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের নেহালগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মা সালমা বেগম (৪০) এবং তাদের মেয়ে সাদিয়া বেগমের (১২) মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  

দিনমজুর সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সালমা এবং তাদের মেয়ে সাদিয়া ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।  

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সালমা এবং মেয়ে সাদিয়া বুধবার (৮ নভেম্বর) ভোর ৫টায় মারা যান।  

বুধবার দুপুরের দিকে নেহালগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মা ও মেয়ের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

দিনমজুর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু থেকে আমার স্ত্রী ও ১২ বছরের মেয়ে কে বাঁচাতে পারলাম না। আমি ছিলাম ঢাকায় কয়েক দিন ধরেই আমার স্ত্রী বলেছিল শরীর অনেক খারাপ গায়ে জ্বর। ফের পাশাপাশি আমার মেয়েটাও অসুস্থ ছিল। আমার মেয়েকে স্থানীয়ভাবে নাপা ট্যাবলেট খাইয়েছি। তারপরও সুস্থ না হলে ডাক্তার দেখানো হয়। ডাক্তার দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হতে জানালে সেখানে ভর্তি করা হয়। তারপরও স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি না হলে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে আমার স্ত্রী মারা যায়।

তিনি বলেন, যখন বাড়িতে আসি ভোরে শুনতে পাই আমার ছোট মেয়ে সাদিয়াও মারা গেছে।  

বহরমপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জলিল মল্লিক বলেন, কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ও জ্বর থাকায় স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখিয়েছে তারা। অবস্থার আরও অবনতি হলে দশমিনা উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তারা বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।  

এ বিষয়ে দশমিনা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মা ও মেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে  আমাদের এখানে ভর্তি ছিল।  ভর্তির আগেই তারা অনেকটা দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। গ্রামের মানুষ তো সচেতন কম ছিল তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা চালিয়েছে। আমাদের কাছে যখন এসেছে তখন তাদের অবস্থা ভালো ছিল না। এজন্য আমরা বরিশালে রেফার করি। আমরা শুনেছি তারা দুজনেই মারা গেছেন। তারপরও আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৩
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।