লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুরে স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে বসতঘরে রেখে দরজা বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেন কামাল হোসেন (৪০) নামে এক পাষণ্ড যুবক। এসময় আগুনে পুড়ে মারা যায় তার সাত বছর বয়সী শিশুকন্যা আয়েশা আক্তার।
এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (৩৫)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোরে বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের চতল্লা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
কামাল ওই বাড়ির মৃত আমিন উল্যার ছেলে। তিনি পেশায় অটোরিকশা চালক। বর্তমানে কামাল পুলিশের হেফাজতে আছে।
মাদকাসক্ত হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কামাল হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ চলছিল। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে একটি সেমিপাকা টিনশেড ঘরে থাকতেন তিনি। গভীর রাতে স্ত্রী এবং দুই সন্তান ঘুমিয়ে গেলে কামাল ঘরের বাইরে এসে দরজা বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মেয়ে আয়েশা আক্তার মারা যায়। স্ত্রী সুমাইয়া এবং শিশুপুত্র আবদুর রহমানকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে সেখান থেকে ইউনিয়ন পরিষদের 'স্বপ্নযাত্রা' অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। দুপুরের দিকে শিশু আবদুল রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ঘটনার পর কামাল নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে থাকা সুমাইয়ার চাচাতো ভাই মো. শাহ আলম মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানায়, মঙ্গলবার দুপুর দেড় টার দিকে চিকিৎসাধীন আবদুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। তার মা সুমাইয়া আক্তারকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে নিহত কামালের মেয়ে আয়েশা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার ভোরে আগুনে দগ্ধ মা ও ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদেরকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজ উদ্দিন বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে কামাল তার বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় কামাল হোসেনকে আটক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২৩
আরএ