ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ইন্ধন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ইন্ধন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’

‘বিশ্ব মানবতার পক্ষে বাংলাদেশ। মানবতার বিরুদ্ধে যে আঘাত করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার বাংলাদেশের মানুষ।

অথচ স্বাধীনতাবিরোধী তথা মানবতাবিরোধী শক্তিকে ইন্ধন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ’

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।  

সভায় মুক্তিযুদ্ধের সময়, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভূমিকা এবং বর্তমানে গাজায় চলমান ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের তীব্র সমালোচনা করেন বক্তরা।

যুক্তরাষ্ট্র মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, ‘একাত্তর সালে বাংলাদেশে যে অনেক বুদ্ধিজীবীসহ এতো মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল তখন বিশ্ব মানবতা কোথায় ছিল? ৭১ এর যুদ্ধের পরে ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে ইন্ধন ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। পরবর্তীকালে আমাদের চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রতিটি ঘটনায় ইন্ধন ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। ’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র ইন্ধন দিচ্ছে, ২০১৩ ও ১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসদেরও তারা ইন্ধন দিয়েছে। তারা ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। একসময় বলা হতো ব্রিটিশে সূর্য ডুবে না, কিন্তু আজকে তাদের পতন হয়েছে। ঠিক তেমনই যুক্তরাষ্ট্রের একসময় পতন হবে, মানবতার জয় হবে। ’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ যারা মানবাধিকার দেখাচ্ছে তার আজ গাজাতে কী করছে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। গাজায় অসহায় মানুষদের যেভাবে হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনীরা তারপরও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হতে দিচ্ছে না।  

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং যুদ্ধাপরাধীদের স্থান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার সনদের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যারা অপরাধ করেছে তাদের কোনো দেশ আশ্রয় দেবে না। কিন্তু তারা আশ্রয় দিয়ে প্রমাণ করেছে মানবাধিকারের প্রতি তাদের আদৌ কোনো ভক্তি শ্রদ্ধা নেই। ’

সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিশ্ব মানবতা আজ বারবার বিপন্ন হচ্ছে। বিপন্ন হচ্ছে বর্বরোচিত আক্রমণ, অমানবিক আচরণের ফলে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যা আমাদের পররাষ্ট্র নীতিতে আছে - সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। বাংলাদেশের মানুষ বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। বিপন্ন মানবতার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে আসে তখন শেখ হাসিনা তাদের আশ্রয় দেন। ফিলিস্তিনের মানুষেরা তাদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে তখনও কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ, সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়। ’

তিনি বলেন, ‘আজকের এই মহান দিনে আমরা জোর গলায় বলি বিশ্ব মানবতার পক্ষে বাংলাদেশ আছে। বিশ্ব মানবতার পক্ষে বঙ্গবন্ধু ছিলেন, বাংলার মানুষ ছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও আছেন। বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র হচ্ছে ভালো মানুষের চরিত্র। বিশ্ব মানবতার পক্ষে বাংলাদেশের মানুষ আছে। আমরা সংঘাত চাই না, সন্ত্রাস চাই না, হত্যা চাই না, শিশুহত্যা চাই না, হাসপাতালে বোমা হামলা চাই না, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে চাই না। পৃথিবীর যেখানে যেখানে মানবতা বিপন্ন হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে আঘাত করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার হতে চাই। ’

সম্প্রীতি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফ আহমেদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য দেন ঢাবি সিনেট সদস্য চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফ্রন্টের নেতা মাহবুব চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক উত্তম বড়ুয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।