ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

আজও স্বীকৃতি পায়নি শ্যামনগরের ২৮ শহীদের পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০১, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩
আজও স্বীকৃতি পায়নি শ্যামনগরের ২৮ শহীদের পরিবার

সাতক্ষীরা: স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও স্বীকৃতি পায়নি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর ও সিংহড়তলী গ্রামের ২৮ শহীদের পরিবার। তাদের জন্য উদ্যোগ নিয়ে শুধু সেখানে একটি নামফলক স্থাপন করেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য একে ফজলুল হক।

সেই ফলকে নাম থাকলেও আজও শহীদ পরিবারগুলো স্বীকৃতি পায়নি। এ জন্য শহীদ পরিবারের সদস্যরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি কোনো কূল কিনারা।

পাক হানাদার বাহিনীর হামলায় নিহত বিহারী লাল মণ্ডলের ছেলে যতিন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়েও গিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কয়েকবার তদন্ত হয়েছে। সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুব আলম এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন। কিন্তু তার কোনো পরিণতি মেলেনি।

একইভাবে নিহত আব্দুল বারী সানার ছেলে রাশেদ জানান, স্বাধীনতার এতো বছর পেরিয়ে গেলেও স্বীকৃতি পাননি তারা।

সেদিনের সেই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে গুণধর বীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, যে-দিন খানসেনাদের হাতে বাবা শহীদ হয়েছেন, সেদিনই সব হারিয়েছি। এখন চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। শুধু অফিসিয়াল স্বীকৃতিটা পেলে তাও হতো।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল (সোমবার) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হরিনগর ও সিংহড়তলী গ্রামে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। দুটি গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে সেখান থেকে ৩৩ জন নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে যায় তারা। পরবর্তীতে তাদের আইবুড়ী নদীর চরে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা হয়। সেখানেই ২৮ জন প্রাণ হারান। পরে সেই শহীদদের আই বুড়ি নদীতেই ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সেদিন শহীদ হন, হরিনগর গ্রামের খগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, নিলশ্বর মণ্ডল, জিতেন্দ্র নাথ মণ্ডল, অজিত মণ্ডল, সুরেন্দ্রনাথ মণ্ডল, খগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, রামেশ্বর মণ্ডল, কালিপদ মণ্ডল, কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল, হরেন্দ্রনাথ মণ্ডল, মহাদেব মণ্ডল, ডা. বিহারীলাল মণ্ডল, অধর মণ্ডল, অধীর মণ্ডল, বিপিন মণ্ডল, মহাদেব মণ্ডল, মহাদেব মণ্ডল, অধীর মণ্ডল, অধীর মণ্ডল (মুন্সীগঞ্জ গ্রামের), সুরেন্দ্রনাথ মণ্ডল, দাউদ গাজী, হাতেম গাজী, আদম গাজী, সৈয়দ গাজী, বিপিন পাঠনি, আব্দুল বারী সানা, কৃষ্ণপদ গাইন ও ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

এ সময় প্রাণে বেঁচে যান গিরেন মণ্ডল, বাবুরাম মণ্ডল, মনোরঞ্জন মণ্ডল, বৈষ্ণব মণ্ডল ও সূর্যকান্ত মণ্ডল।

মহান মুক্তিযুদ্ধে একইস্থানে এতগুলো মানুষের হত্যার ঘটনাস্থলে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি জানান উপকূলবাসী।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম রাতুল বাংলানিউজকে বলেন, আমি নতুন এসেছি। বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।