ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চাকরি হারানোর প্রতিশোধ নিতে ফেরদৌসকে খুন করেন মামুন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
চাকরি হারানোর প্রতিশোধ নিতে ফেরদৌসকে খুন করেন মামুন!

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌস (১৮) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।  

ঘটনার সঙ্গে জড়িত মামুনকে গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।

 

মামুন উপজেলার ঘোড়শাল গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। কারখানার রড চুরির দায়ে চাকরি হারানোর প্রতিশোধ নিতেই নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌসকে খুন করেছেন বলে গ্রেপ্তার মামুন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।  

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে শাহজাদপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান।  

তিনি বলেন, তালগাছি এলাকার আর কে টেক্সটাইল মিলের নিরাপত্তা প্রহরী ও শাহজাদপুরের মশিপুর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে ফেরদৌস গত ৫ জানুয়ারি কর্মস্থলে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। ৮ জানুয়ারি তার বাবা আক্কাস আলী থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। জিডির পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে।  

বুধবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকার আদাবর থানার সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামুন হোসেন (৩০) নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তার জিম্মা থেকে নিহত ফেরদৌসের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আর কে টেক্সটাইল মিলসে মাটি খুঁড়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কম্বল ও লোহার সোলাই রেঞ্জ এবং গর্ত করার কাজে ব্যবহৃত কোদাল উদ্ধার করে জব্দ করেছে পুলিশ।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন হত্যার দায় স্বীকার করে বলেন, ২০২০ সালে ওই মিলে কাপড়ের প্রিন্ট ডিজাইনার হিসেবে তিনি যোগদান করেন। চাকরির সুবাদে ফেরদৌসের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। ৪/৫ মাস আগে মিলের লোহার রড চুরির সময় তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন ফেরদৌস। এতে মামুনের চাকরি চলে যায়। তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ফেরদৌসকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।  

গত ৪ জানুয়ারি মামুন ঢাকা থেকে এসে ফেরদৌসের সঙ্গে দেখা করে আগের ঘটনার জন্য মাফ চেয়ে তার সঙ্গে রাতে মিলের মধ্যে থাকতে চান। তারা ওইদিন মিলের মধ্যে একসঙ্গে ঘুমান। ৫ জানুয়ারিতেও তারা রাতে একসঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। ওইদিন গভীর রাত সাড়ে ৩টার দিকে মামুন চুরির উদ্দেশে মিলের মধ্যে লোহার রড খুলতে থাকেন। রড খোলার শব্দে ফেরদৌসের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি মামুনকে নিষেধ করেন এবং ড্রয়ারে থাকা সেলাই রেঞ্জ নিয়ে তাকে মারতে যান। মামুন তার হাত থেকে রেঞ্জটি কেড়ে নিয়ে ফেরদৌসের মাথায় সজোরে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই ফেরদৌস মারা গেলে পাশে থাকা কোদাল দিয়ে গর্ত করে তার মরদেহ বালুর মধ্যে পুঁতে রেখে পালিয়ে যান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।