যশোর: যশোরে সৎমায়ের নির্যাতনে দেড় বছর বয়সী একটি শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত শিশু আয়শা খাতুন যশোর শহরের খড়কি ধোপাপাড়া এলাকার পিন্টু মিয়ার মেয়ে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা পিন্টু মিয়া ও সৎমা পারভীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
যশোর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শুভাশিস রায় জানান, শনিবার দুপুর ১টার দিকে আয়শাকে তার পরিবারের সদস্যরা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে আয়শার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, আয়শার বাবা পিন্টু মিয়া পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। কাজের জন্য প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে যান তিনি। বাবার অনুপস্থিতিতে গত চারদিন ধরে আয়শাকে মারধরসহ শারীরিক নির্যাতন করেন তার সৎমা পারভীন সুলতানা। শনিবারও আয়শাকে মারধর করেন তার সৎমা। মারধরে অজ্ঞান হয়ে যায় শিশু আয়শা। এরপরে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আটক আয়শার সৎ মা পারভীন জানিয়েছেন, আয়শা ও তার একটা ভাই আছে। তাদের মা দেড় বছর আগে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক করে ছেলেমেয়ে ফেলে চলে গেছেন। এদিকে পারভীনের প্রথম স্বামীর সঙ্গে সংসারকালে একটি মেয়ের জন্ম হয়। মেয়েটির বয়স নয় বছর। কিন্তু তার প্রথম স্বামী অন্য একটা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করে বিয়ে করায় পারভীনের তালাক হয়ে যায়। পারভীন এক বছর আগে পিন্টুর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করে আসছিলেন। দুইটি সন্তানকে তারা খুবই ভালোবাসতেন। শনিবার অতিরিক্ত শীতে হঠাৎ মাটিতে পড়ে গিয়ে আয়শা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত আয়শার বাবা পিন্টু মিয়া জানিয়েছেন, তার বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। অভাবের সংসারে কাজের জন্য কয়েক বছর আগে যশোরে আসেন। আয়শার মা পরকীয়া করে চলে যাওয়ার পরে পারভীনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। শনিবার সকালে কাজের উদ্দেশ্যে তিনি বাসা থেকে বের হন। দুপুর ১২টার দিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে আয়শাকে মৃত দেখতে পান। কিন্তু কী কারণে কী হয়েছে তিনি এখনো জানেন না।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (এসআই) পলাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, শিশুটিকে মারধরে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মা ও বাবাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
ইউজি/এএটি