ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রূপগঞ্জে শীতবস্ত্র বিতরণের আগমুহূর্তে দুর্বৃত্তদের নারকীয় তাণ্ডব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
রূপগঞ্জে শীতবস্ত্র বিতরণের আগমুহূর্তে দুর্বৃত্তদের নারকীয় তাণ্ডব

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের আগমুহূর্তে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তারা পরিষদের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে।

একটি গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।  

একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে পরিষদের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখে। দুর্বৃত্তদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সদ্য গজিয়ে ওঠা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিকের ভাই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এই নারকীয় হামলা ও তাণ্ডব ঘটে।  

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে (রূপগঞ্জ) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার ও তার অনুসারীরা।  

মঙ্গলবার দুপুরে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে কম্বল বিতরণের আয়োজন করেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার। একই সময় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের গেটের সামনে আন্ডা রফিকের ভাই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা জমায়েত হতে থাকে। এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দুপুর দেড়টার দিকে আন্ডা রফিকের ভাই মিজান ও তার লোকজন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের ব্যবহৃত হ্যারিয়ার গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুরো গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।  

এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভেতরে নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। হামলাকারীরা মাঠের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। পরিষদের কক্ষে ঢুকেও ভাঙচুর তাণ্ডব চালায় তারা। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনাও ঘটে। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যান।  

হামলার সময় জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ও রূপগঞ্জ থানার ওসির সহায়তা চাওয়া হলেও তাদের সাড়া মেলেনি। পরে সহকারী পুলিশ সুপার পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।  

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে উদ্ধার করেন। এছাড়া পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নেভান। ততক্ষণে অবশ্য গাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।  

এ বিষয়ে দাউদপুর পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, এলাকার দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে এখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চেয়ার টেবিল দেওয়া হয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন প্রকার অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গেট ভেঙে আমার লোকজনের ওপর হামলা করে এবং গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।