ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মিরপুরের প্যারিস খাল আগের রূপে ফেরানো হবে: মেয়র আতিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
মিরপুরের প্যারিস খাল আগের রূপে ফেরানো হবে: মেয়র আতিক

ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ময়লা ও দখলমুক্ত করে রাজধানীর মিরপুরের প্যারিস খাল আগের রূপে ফেরানো হবে। এ খাল পরিষ্কার হলে মেয়র এবং কাউন্সিলররা কিন্তু এর সুফল ভোগ করবে না।

এর সুফল ভোগ করবে এলাকাবাসী।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের সবার জন্যই এই খাল পরিষ্কার করা হবে।  

আগামী শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে আমি সশরীরে উপস্থিত থেকে প্যারিস খাল পরিষ্কারে অভিযান শুরু করবো। আমি নিজেও আসব, আশা করছি এলাকাবাসী আমাদের সঙ্গে থাকবে। সিটি করপোরেশনের কর্মী, বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবী এবং এলাকাবাসীকে নিয়ে এ খাল পরিষ্কার করবো।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে মিরপুর-১১ নম্বর প্যারিস খাল পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি আজ মিরপুর প্যারিস খালের উপরে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি খাল। অথচ একসময় এ প্যারিস খাল দিয়ে নৌকা চলতো, এ খালে মানুষ সাঁতার কাটতো। সবাই নির্বিচারে ময়লা ফেলে খাল ভরাট করে ফেলেছে। পরিবেশকে আমরা ধ্বংস করে ফেলেছি। পরিবেশ এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, এ এলাকার বাড়িঘর ডুবে যায়। কারণ এ খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না। ময়লা ফেলে খালটিকে ধ্বংস করে ফেলেছে। অথচ এ এলাকার মানুষই অভিযোগ করছে জলাবদ্ধতার বিষয়ে। ঐতিহ্যবাহী এ প্যারিস খাল পুনরুদ্ধারে আমি এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই।

মেয়র বলেন, প্যারিস খালটির প্রস্থ ৪০ ফুট হলেও কোনো কোনো জায়গায় ১৮ ফুট। কোনো কোনো জায়গায় এখন ১০-১১ ফুট অবশিষ্ট আছে। এতে এলাকাবাসীর সহযোগিতা খুব প্রয়োজন। যখন মেশিন আসবে, তখন তাদের নানা বিপত্তিতে পড়তে হবে। খাল দখল কোনো সমাধান না। উচ্ছেদ না করা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। যারা এখানে বসবাস করেন, তাদের চলে যেতে হবে। কারণ ভাঙা শুরু করলে থাকার কোনো অবস্থা থাকবে না। ময়লামুক্ত ও দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান ও উচ্ছেদ চলমান থাকবে।

এলাকাবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, খাল পরিষ্কার থাকলে রোগবালাই কম হবে। মশার প্রজনন কমে যাবে। দুর্গন্ধ থাকবে না। আপনারাই ভালো থাকবেন। উন্নত দেশে খাল সামনে রেখে বাড়ি নির্মাণ করা হয়। আর আমাদের দেশের উল্টো চিত্র। আমাদের দেশে সবাই খাল পেছনে রেখে বাড়ি নির্মাণ করি। বাড়ির পেছনে খালকে ময়লার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করি। এ অবস্থা থেকে পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিদর্শনে এসে দেখলাম খালে অনেক বাঁশের সাঁকো, বিদ্যুতের সংযোগ, সুয়ারেজের সংযোগ। সবাইকে অনুরোধ করছি এগুলো সরিয়ে চববেন।

দূষণকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেন, আমরা খালটি পরিষ্কার করার পর আর কেউ ময়লা ফেলতে পারবেন না। খালের পাড়ে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দিব। খালে ময়লা ফেললে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ দখলদাররা নিজ দায়িত্বে দখলমুক্ত করে দেবেন। আমরা যখন উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবো তখন কিন্তু সময় পাবেন না।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে একের পর এক অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে অভিযান করছি। এর আগে আমরা লাউতলা খাল, রামচন্দ্রপুর খাল উদ্ধার করেছি। দীর্ঘ ৪০ বছর পর সূতিভোলা খাল উদ্ধার করেছি। গত সপ্তাহে মোহাম্মদপুরে জাকের ডেইরি ফার্মের অবৈধ দখল থেকে ডিএনসিসির জমি উদ্ধার করেছি। নগরের অন্যান্য খালগুলো যেভাবে সংস্কার করা হয়েছে, এখানেও তাই করা হবে। ঢাকার যেসব খাল এভাবে দখল করা হয়েছিল, সবগুলোই কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা উদ্ধার করেছি। খাল উদ্ধারের পর খালের পাশে ওয়াকওয়ে করা হবে, সাইকেল লেন করা হবে। স্থায়ীভাবে এসবের সমাধান করা হবে।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামাল মোস্তফা, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক ও ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন রশিদ (জনি)।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪
এমএমআই/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।