নড়াইল: একুশে পদকপ্রাপ্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত চারণকবি কবিয়াল বিজয় সরকারের ১২২তম জন্মবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি)। অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদরের ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
অসম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা, গীতিকার ও গায়ক, চারণকবি বিজয় সরকারের বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। বিজয় সরকার নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত। তার দুই স্ত্রী বীণাপানি ও প্রমোদা অধিকারীর কেউ বেঁচে নেই। বিজয় সরকারের দুই ছেলে কাজল ও বাদল অধিকারী ভারতে বসবাস করেন।
বিজয় সরকার একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। মুক্তিযুদ্ধের গানসহ ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কি ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে বিজয় সরকার জন্মজয়ন্তী উৎসব উদ্যাপন কমিটি কবির জন্মভূমি নড়াইল সদর উপজেলার ডুমদি গ্রামের নিজ বাসভবনে দুদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দিনব্যাপী উন্মুক্ত বিজয় গীতি পরিবেশনা, বিকেলে আলোচনা সভা, রাতে কবিগানের আসর। কবিগান পরিবেশনা করবেন প্রভাষ সরকার ও সন্তোষ সরকার।
বিজয় সরকার জন্মজয়ন্তী উৎসব উদ্যাপন কমিটির সদস্য সুলতান মাহমুদ বাংলানিউজ বলেন, বিজয় সরকারের দুদিনব্যাপী জন্মজয়ন্তী উৎসব সুষ্ঠুভাবে পালনের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি একাধারে গানের রচয়িতা ও সুরকার। পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনি/ একদিন ভাবি নাই মনে। এই পৃথিবী যেমন আছে/ তেমনি ঠিক রবে/ সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে/ একদিন চলে যেতে হবে। তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’-এ ধরনের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ৮০০ গান রচনা করেছেন তিনি।
১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেলুড়িয়া নামক স্থানে কন্যা বুলবুলির বাড়ি বিধান পল্লিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন এই কবি। সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই চারণ কবি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
এসএম