ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রমজানে ডিম-মুরগির দাম কমাতে পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ৩ দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
রমজানে ডিম-মুরগির দাম কমাতে পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ৩ দাবি

ঢাকা: আসন্ন রমজানে ডিম ও মুরগির দাম ভোক্তার নাগালে রাখতে রাস্তায় পুলিশি হয়রানি বন্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের অন্য দুই দাবি হলো- প্রান্তিক খামারিদের ডিম-মুরগি পরিবহনের খাঁচা ও ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অনুমোদন এবং রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি উত্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।

তিনি বলেন, কর্পোরেট গ্রুপগুলোর ডিম-মুরগি, পোল্ট্রি ফিড, মুরগির বাচ্চা পরিবহনের জন্য বিআরটিএ থেকে গাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের ডিম ও মুরগি পরিবহনের গাড়ির খাঁচা বা ক্যারিয়ারের কোনো অনুমোদন দেওয়া হয় না। ফলে গাড়িগুলো রাস্তায় চলতে সারা দেশে ট্রাফিক বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশ, থানার চেকপোস্ট ও পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাসহ সবাইকে ম্যানেজ করতে হয়। আর এর জন্য মাসিক চাঁদা দিতে হয়৷ এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

পাশাপাশি স্থানীয় চাঁদাবাজদের কবলেও পড়তে হয় এসব গাড়িকে। মাসিক চাঁদা দিয়েও গাড়িগুলো দিনের বেলা চলাচল করতে না পারায় ডিম ও মুরগি পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। রাতে চলাচল করার কারণে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। যার জন্য আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এতে ডিম ও মুরগি পরিবহন খরচ বাড়ে ও দামও বেড়ে যায়।

সুমন বলেন, রমজানের আগে ডিম মুরগির দাম বাড়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো- কর্পোরেট গ্রুপের সব ধরনের মুরগির বাচ্চা আমদানির অনুমতি থাকলেও প্রান্তিক খামারিদের জন্য অনুমতি নেই। এছাড়া প্রান্তিক খামারিদের মতামত না নিয়ে শুধু কর্পোরেট সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিয়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা উৎপাদন খরচের মুরগির বাচ্চার দাম প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর ৪৯ থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এদিকে কর্পোরেট গ্রুপগুলো মুরগির বাচ্চার উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে তারা তাদের চাহিদা মতো নিজস্ব খামারে বাচ্চা তুলেছে এবং কন্ট্রাক্ট খামারিদের দিচ্ছে। অবশিষ্ট বাছাই করা নিম্নমানের বাচ্চাগুলো অতিরিক্ত দামে তাদের পরিবেশকের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারিদের।

তিনি অভিযোগ করেন, কর্পোরেট গ্রুপগুলো মুরগির বাচ্চা ও মুরগির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিম ও মুরগির দাম বাড়িয়ে দেয়৷ এখন বাজারে যে পরিমাণ মুরগি আছে এগুলো বেশির ভাগ কোম্পানির নিজস্ব উৎপাদন এবং তাদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের। অথচ খামারিদের মুরগি বাজারে এলে ম্যাজিকের মতো দাম কমে যায়। প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্য মূল্য দিয়ে উৎপাদনে ধরে রাখতে না পারলে কখনই ডিম ও মুরগির বাজারে স্বস্তি ফিরবে না।

মুরগির দাম কেন বাড়ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, কারণ হচ্ছে মুরগির বাচ্চার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন থেকে সরিয়ে দেওয়া।

রমজানের আগে দাম বাড়বে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুরগির সংকটের কারণে এবার আংশিকভাবে রমজানের আগে দাম বাড়বে। তবে ৪ থেকে ৫ রমজানে যখন মুরগির বাচ্চা আসবে তখন দাম কমে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বাপ্পী কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, পোল্ট্রি উদ্যোক্তা কাউসার আহমেদ, কন্ট্রাক্ট খামারি ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।