ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গাংনী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ফের ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
গাংনী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ফের ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ

মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনীতে ভুল চিকিৎসায় পান্না খাতুন (২২) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পান্না খাতুন গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের সেলিম রেজার স্ত্রী।

পান্নার স্বজনেরা জানান, রোববার সকালে পান্নার প্রসব বেদনা উঠলে পরিবারের লোকজন হাসিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসে। সেখানে আবু সালেহ মো. ইমরান হোসেন সিজারিয়ান অপারেশন করে। রোগীর অবস্থা অবনতি হলে দ্রুত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। তাদের রোগীর ঠিকভাবে অপারেশন করতে পারেনি।

তবে রোগী মৃত্যুর পর থেকেই হাসিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পলাতক রয়েছে।

তবে, ক্লিনিক মালিক হাফিজুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, সিজারের সময় আমি অপারেশন থিয়েটারে থাকি। পান্না খাতুন ভুল চিকিৎসায় নয়, কার্ডিয়াক অ্যাটাকে মারা গেছেন। নিহত পান্না খাতুনকে এনেসথেসিয়া দেন চিকিৎসক ইমরান হোসেন।

হাসপাতালের রিসিপশনে দায়িত্বে নিয়োজিত পপি খাতুন বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক হাফিজুল ইসলাম ইফতার করতে বাড়িতে গেছেন। আর আসেনি। ডাক্তার আবু সালেহ মোহাম্মদ ইমরান সিজার করেছেন। এসময় সেবিকা ছিলেন পারুলা খাতুন নামের একজন।

তিনি আরও জানান, নিহত পান্না খাতুন সকালের দিকে প্রসব বেদনা নিয়ে আমাদের এখানে ভর্তি হন। সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে তাকে সিজার করা হয়। রোগী ও সন্তান প্রথম দিকে সুস্থ থাকলেও কিছুক্ষণ পর মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাউন্ডে আসা চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান রিংকু তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানেই নিয়ে যাওয়ার সময় পথে মারা যান তিনি।

চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান রিংকু বলেন, আমি রোগীর অবস্থা দেখে স্বজনদের বলেছি রোগী এখানে থাকলে মারা যাবে। দ্রুত উন্নত হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে, আমি রেফার্ডের কাগজপত্র কোথাও স্বাক্ষর করিনি। রোগীর কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়েছে লিখতে বলেছিলেন মালিক। আমি সেটি লিখিনি।

জানা গেছে, সরকারি বিধি মোতাবেক বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকলেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন সিজারিয়ান। এখানে দক্ষ সিজারিয়ান ও এনেসথেসিয়া চিকিৎসক, নার্স না থাকলেও ক্লিনিক মালিক হাফিজুল ইসলাম চালিয়ে যাচ্ছেন এই ব্যবসা।

ওটি রুমে নিজের থাকার ব্যাপারে হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমি ক্লিনিকের মালিক হিসেবে ওটিতে থাকতে পারি। সিজার ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করি। এর আগে জুগিন্দা গ্রামের একজন রোগী মারা যান। সেটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে সমঝোতা করা হয়েছে। এটাও সমঝোতা করে নেবো।  

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, এখন পর্যন্ত বিষয়টি শুনেছি, খোঁজখবর নিচ্ছি। ঘটনার সত্যতা পেলে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।