ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কচুয়ায় হঠাৎ ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৪
কচুয়ায় হঠাৎ ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড

চাঁদপুর: হঠাৎ ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।

রোববার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে সদর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে।

এসময় বহু ঘরের চালা ও টিন উড়ে গেছে। শতশত গাছ উপড়ে গেছে, ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে ডালা-পালা।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে ও তুমুল বৃষ্টিতে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  
পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝড়টি যে দিক দিয়ে গেছে, সে দিকে গাছপালা, বাড়িঘর, মুরগির খামার, টিনশেড মসজিদ ঘর তছনছ হয়ে গেছে। ভুট্টা এবং বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদের ঘর, লতিফপুর গ্রামের উত্তরপশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া এলাকার সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলমের বসত ঘর, জলা তেতৈয়া এলাকার অরুণ বৈদ্যের দোকান ঘর, সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিণ ইউনিয়ন ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামের পরিবারগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, গত সন্ধ্যায় হঠাৎ করে গ্রামের ওপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে। অনেকেরই ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। শুধু তাই নয়, ফল গাছ ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ওই গ্রামের বিধবা জিলহজ বেগম বলেন, হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার একমাত্র বসতঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়। আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছিলাম। ঝড়ে আমার সব কিছু নিয়ে গেল। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।

একই উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পোল্ট্রি ফার্মের ঘর ভেঙে পুকুরে পড়েছে, অনেক মুরগি মারা গেছে। এতে চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কচুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম বেলায়াত হোসেন বলেন, সন্ধ্যার ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি।  

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ফসলি জমি বিশেষ করে ভুট্টা ও বোর ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, খবর পেয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছেন।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, ইউপি সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।