ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ছুটি বাড়ানোর দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ছুটি বাড়ানোর দাবি

ঢাকা: আসন্ন ঈদে যাতায়াতে দুর্ভোগ, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ভাগে ভাগে যাওয়ার সুবিধার্থে ঈদের ছুটি ২ দিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

ঈদযাত্রা নিরাপদ ও ভোগান্তিমুক্ত করতে ৮ এবং ৯ এপ্রিল দু-দিন ছুটি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ বলছে , এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটি, গাজীপুর থেকে ৪০ লাখ, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১২ লাখসহ ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এসব যাত্রীদের ঈদের আগের চারদিনে বাস-মিনিবাসে ৩০ লাখ, ট্রেনে ০৪ লাখ, প্রাইভেটকার, জিপ ও মাইক্রোবাসে ৩৫ লাখ, মোটরসাইকেলে ১২ লাখ, লঞ্চে ৬০ লাখ, উড়োজাহাজে প্রায় ১ লাখ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে। গণপরিবহন সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে এবং খোলা ট্রাক ও পণ্যবাহী পরিবহনে ১৮ লাখ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে। এছাড়াও আন্তঃজেলা যাতায়াত করবে প্রায় ৪ থেকে ৫ কোটি যাত্রী। এতে আগামী ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে।

এজন্য গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

কেননা, এবার রোজা ৩০টি সম্পন্ন হলে ১১ এপ্রিল ঈদ হতে পারে। ঈদের আগে ১০ এপ্রিল মাত্র ১ দিন সরকারি ছুটি রয়েছে। ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ দিনের লম্বা ছুটি রয়েছে। ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। যে কারণে এবারের ঈদযাত্রায় মুসলমানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও পহেলা বৈশাখ উদযাপনে লম্বা ছুটির সুবাদে গ্রামের বাড়ি যাবেন। তাই যাত্রীসংখ্যা বাড়বে। অর্থাৎ ৯ ও ১০ এপ্রিল প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ লাখ হারে মানুষ রাজধানী ছাড়বে। অথচ আমাদের গণপরিবহনগুলোতে ২২ থেকে ২৫ লাখের মত মানুষ পাড়ি দেওয়ার সক্ষমতা আছে। এমন পরিস্থিতিতে ঈদের আগে ছুটি না বাড়ালে দেশের সকল পথে যাতায়াত পরিস্থিতি কোমায় চলে যেতে পারে। তাই ৮ এবং ৯ এপ্রিল ২ দিন ঈদের ছুটি বাড়ানো হলে ৫ এপ্রিল থেকে সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে, ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পাবে। গণপরিবহন সংকট ও যাত্রী ভোগান্তি থেকেও মুক্তি মিলবে। এ কারণে ৮ ও ৯ এপ্রিল দুই দিন ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।  

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এবারের ঈদে দেশে ৭১৪টি স্পটে যানজট হতে পারে এমন খবর গণমাধ্যমে এসেছে। যার মধ্যে ১৪০টি স্পটে কড়া নজরদারি দরকার। ১০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ২১৮টি অতিঝুঁকিপূর্ণ দুর্ঘটনার স্পটের বিষয়ে পুলিশ ও  বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সরকারকে সতর্ক করেছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এসব স্পটেই ৬০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর প্রতিটি সড়কের ফুটপাত হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করার দাবি জানানো হয়।  

রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলোতে যাত্রীদের অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে। এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তারা।  

তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন সকাল অবধি রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল অচল হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করা হয়।

এছাড়া কিছু অসাধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয় বলে দাবি করে সংগঠনটি।

ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি ও টোল পয়েন্টগুলো যানজটমুক্ত করার দাবি জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
এইচএমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।