ঢাকা: সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে।
বাংলানিউজের ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো প্রতিবেদন:
চাঁদপুর: সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফসহ জেলার প্রায় ৪০ গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) দরবার শরীফের অনুসারীরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে এসব গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন শুরু করে।
হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফ জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের নামাজের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন পীরজাদা ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী। একই সময়ে সমেশপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই নামাজের জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরীফের পীর শাইখ আরীফ চৌধুরী।
পীরজাদা ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র সৌদি আরব নয়, কোরআন ও হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আমরা রোজা পালন ও ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকি। আগাম রোজা ও দুই ঈদ পালনের প্রবর্তক মাওলানা ইসহাক (রহ.)। ১৯২৮ সাল থেকে তিনি সৌদি আরবসহ আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু করেন।
মাদারীপুর: মাদারীপুরের ২৫ গ্রামের মানুষও আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের তাল্লুক গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের নামাজ পড়ান তাল্লুক গ্রামের মৌলভী বাড়ির মসজিদের ইমাম মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান।
সুরেশ্বর দরবার শরীফের মুরিদ মো. ইকবাল সরদার বলেন, প্রায় দেড়শ বছর ধরে সৌদি আবরসহ মধ্যপ্রাচের সঙ্গে মিল রেখে বছরে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করা হয়। বছরে দুটি ঈদ উৎসব এভাবেই পালন করে আসছেন এখানকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
ঢাকা: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রাজধানীর পান্থপথে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় পান্থপথ এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে শিশু ও নারীসহ মুসল্লিরা জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ভাগাভাগি করে নেন ঈদ আনন্দ। নামাজ পড়তে আসা কয়েকজন মুসল্লি জানান, চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে ঈদ করো। সারা পৃথিবীতে ঈদ হচ্ছে সে হিসেবে আমরাও পালন করছি। এর আগেও ঈদ পালন করেছি।
পটুয়াখালী: কোনো দেশকে অনুসরণ করে নয়, বিশ্বের যে-কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরীফসহ জেলায় অন্তত ২০ গ্রামে আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বদরপুর দরবার শরীফের মসজিদে অনুষ্ঠিত ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা মো. শফিকুল ইসলাম আব্দুল গনি।
এছাড়া জেলার বাউফল, গলাচিপা, কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালীর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়।
বরিশাল: মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে জেলার প্রায় অর্ধশত মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বরিশাল নগরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাজকাঠীর হাজী বাড়ির জাহাগিরিয়া শাহসুফী মমতাজিয়া জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ৮টার পর থেকেই এ মসজিদে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। বয়ান, খুতবা পাঠের মধ্য দিয়ে ঈদের নামাজ আদায় শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা একে অপরকে জড়িয়ে কোলাকুলি করেন। মসজিদে ঘিরে আলাদা এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
চট্টগ্রাম: মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশসহ অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে।
সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাহাগিরিয়া শাহ ছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদ উদযাপন করছেন।
জাহাগিরীয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের সৈয়্যদ মাওলানা মোহাম্মদ আলীর ইমামতিতে ঈদুল ফিতরের ১ম জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় ও দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মনজুর আলীর ইমামতিতে ২য় জামাত সকাল ৯টায় নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া মির্জাখীল দরবার শরীফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুল হামিদ শাহ জাহাগিরীর (নুরুল আরেফিন) ইমামতিতে মির্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ১০টায় ও সৈয়দ ড. মাওলানা মাকসুদুর রহমানের ইমামতিতে সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
দিনাজপুর: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে দিনাজপুরের কয়েকটি গ্রামের মুসল্লিরা।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৮টায় দিনাজপুর চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রায় ছয় শতাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও জামাতের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের নামাজে অংশ নেন।
এতে ইমামতি করেন বিরল উপজেলার ফ্যামিলি কেয়ার মাদরাসার পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।
খুলনা: সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন খুলনার কিছু মানুষ।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় খুলনার বোয়ালখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে আবু নাসের দিকে যেতে লেবুতলা জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের সালাত আদায় হয়। দুই জামাতে দুই শতাধিকের বেশি নারী-পুরুষ অংশ নেন।
এছাড়াও ভোলা, ঝিনাইদহ, পিরোজপুর, জামালপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, গাইবান্ধা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।
ফেনী: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ফেনী জেলার তিনটি স্থানে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। সকালে পৃথক তিনটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়৷
এ স্থানগুলো হলো- ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পৃথক দুটি পাড়া এবং পরশুরাম পৌরসভার কোলাপাড়া এলাকা।
ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন টিপু বলেন, ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি পাড়ায় সৌদির সঙ্গে মিল রেখে কিছু মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।
এদিন জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা পরশুরাম পৌর এলাকার কোলাপাড়া ছয়ঘরিয়া এলাকার একটি স্থানেও ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৪
আরএ/এসআইএ