ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অব্যবস্থাপনায় বিলীনের পথে চলনবিল

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৪
অব্যবস্থাপনায় বিলীনের পথে চলনবিল

সিরাজগঞ্জ: ভরা বর্ষায় চলনবিলের বিস্তীর্ণ নদী-খাল কিংবা বিলে পাল তোলা নায়ে গাঁয়ের বধূর বাপের বাড়ি যাওয়ার চিত্র এখন আর নেই। স্বচ্ছ জলরাশির স্রোতে রূপালি ঝলকে খসল্লা-কাকিলা আর টেংরা-পুঁটির ছুটে চলার দৃশ্যও আর চোখে পড়ে না।

আকাশে দেখা যায় না সাদা পালক শোভিত উড়ে চলা বক পাখির ঝাঁক। পানিশূন্য তাই দেখা মেলে না পানকৌড়ি আর মাছরাঙা পাখিরও।  

বসন্তেও শোনা যায় না কোকিলের গান। দোয়েল, কোয়েল, চড়াই শালিকের দেখা মেলাও ভার। সংকুচিতে হয়েছে চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠে সবুজ সমুদ্রের ঢেউ। এমনই করুন অবস্থায় অস্তিত্ব বিলীন হতে বসেছে উত্তরবঙ্গের শস্য ও মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত চলনবিল।  

উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট ও বাঁধ নির্মাণ, অবাধ পুকুর খনন, স্থাপনা নির্মাণে করে খাল-বিল-নদীর পানি প্রবাহের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির মাধ্যমেই ধ্বংস করা হচ্ছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলময় ভূ-ভাগ ঐতিহ্যবাহী চলনবিলকে। কয়েক দশকে চলনবিলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। পানিশূন্য হয়ে মরে গেছে বেশিরভাগ নদী ও খাল। নানা প্রতিকূলতা বিলুপ্ত হয়েছে হরেক প্রজাতির দেশীয় মাছ, হরেক রকমের পাখিসহ শত শত জলজ ও উদ্ভিজ্জ প্রাণী।  

এক সময় মৎস্য, শস্য ও প্রাকৃতিক রত্ন ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত চলনবিল বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রূপে সজ্জিত হতো। গ্রীষ্মের দিগন্তজুড়ে সোনালী ধানের মাঠ। বর্ষায় সূর্যকিরণের প্রতিফলনে ঝিলমিলিয়ে উঠতো বিস্তীর্ণ জলাভূমি। শরত ও হেমন্তে কৃষকের ডিঙি নাও ভরে উঠে ছোট-বড় দেশীয় মাছে। শীতকালে সরিষা ফুলে ছেয়ে যাওয়া মাঠকে মনে হতো যেন হলুদের সমুদ্র। চলনবিলের এসব নৈসর্গিক দৃশ্য ধীরে ধীরে বিলীনের পথে।   

চলনবিলের উৎপত্তি:

সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর ও নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার দুই হাজার গ্রাম নিয়ে চলনবিলের অবস্থান। উপজেলাগুলো হলো- সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুরা, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর, বরাইগ্রাম, সিংড়া ও নওগাঁর আত্রাই।  

বিশেষজ্ঞদের মতে চলন্তবিল থেকে চলনবিল নামের উৎপত্তি। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র গতিপথ পরিবর্তন করে যমুনা নদী জন্মের সময় চলনবিলের সৃষ্টি হয়েছে। ১৯০৯ সালে পাবলিক ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের জরিপ মতে প্রাচীন চলনবিলের আয়তন ছিল এক হাজার ৮৫ বর্গ কিলোমিটার। ১৯১৯ সালে ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়ার হিসেব মতে, এ বিলের আয়তন ৫০০ বর্গমাইল বা প্রায় ১৪২৪ বর্গকিলোমিটার। ১৯৪০ সালে পূর্ববঙ্গ রেলওয়ে প্রচার বিভাগের তথ্যমতে তখন এর আয়তন ছিল ৪৪১ বর্গ মাইল বা ৭০৫ বর্গ কিলোমিটার।  

তবে ‘চলনবিলের ইতিকথা’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, অতীতের চলনবিল ছিল ভয়ংকর বিশাল জলধি। বিলটি বৃহত্তর পাবনা, রাজশাহী, নওগাঁ ও বগুড়া জেলার অধিকাংশ স্থান জুড়ে বিস্তৃত ছিল। পদ্মা তীরবর্তী লালপুর থানা ব্যতিত তদানিন্তন নাটোর মহুকুমার সমগ্র অংশ চলনবিলময় ছিল। তখন বগুড়ার শেরপুর, নন্দীগ্রাম, পাবনার বেড়া, শাহজাদপুর (অংশ বিশেষ) ও নওগাঁর রাণীনগরসহ উল্লিখিত জেলা সমূহের মোট ১৪টি থানা বা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী আরও ২০টি উপজেলায় চলনবিলের প্রভাব ছিল।  

এ বিলে ছিল খরস্রোতাসহ ছোটবড় ৩২টি নদী, ৯৩টি বিল ও ২৬টি খাল। এসব নদী-খাল ও বিলকে ঘিরে ছোট ছোট অসংখ্য উপনদী, উপখাল ও ছোট বিলও ছিল। উল্লেখযোগ্য নদীর মধ্যে বড়াল, আত্রাই, গুমানী, ইছামতি, করতোয়া, গোহালা, ভদ্রাবতী, বিলসূর্য, গুড়, কুমারডাঙ্গা, নন্দকুজা, গাড়াদহ, কাকন-কানেশ্বরী, সরস্বতী, মুক্তাহার, নাগর, বানগঙ্গা, ভাদাই, গদাই, শালিকা, কাটাগাঙ, তুলসীগঙ্গা, বারণী, ফুলজোড়, ইত্যাদি।  

২৬টি খালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, নিমাইচড়া খাল, দোবিলা খাল, গোহালার খাল, কিশোরখালি খাল, বেহুলার খাড়ি, বাকাই খাড়ি, পানাউল্লার খাল, উলিপুর খাল, গুমানী খাল, কুমারভাঙ্গা খাল, গাড়াবাড়ি খাল ও কাটাবাড়ী খাল ইত্যাদি। খালগুলো ১২ থেকে ২০ কি. মি. পর্যন্ত দীর্ঘ।  

৯৩টি বিলের মধ্যে সিংড়ায় ৫, গুরুদাসপুর ৩, চাটমোহরে ২০, ভাঙ্গুরা ১৮, ফরিদপুর ২, শাহজাদপুর ৮, উল্লাপাড়া ২০ ও রায়গঞ্জে ১৭টি। এসব বিল ছাড়াও প্রায় শতাধিক ছোট ছোট উপ-বিলও ছিল। আশির দশকেও চলনবিলের বেশ কয়েকটি নদী ও খাল দিয়ে লঞ্চ, জাহাজ, স্পিড বোট চলাচল করতো। পালতোলা নৌকা নিয়ে লোকেরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করত।

রুই, কাতলা, মৃগেল, শোল, বোয়াল, চিতল গজার, আইড়, গুঁজি, কৈ, পাবদা, সিলং, মাগুর, শিং, গোচি, বাইম, বাটা, খসল্লা, নন্দই, টাকি, চেলা, চাপিলা, পুঁটি, মলা, বাঁশপাতারি, বৌমাছ, বেলে, দেশী চাঁদা, মলা, ঢেলা, টেংরা, কাকিলা, চিংড়ি, বাতাসীসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন ঘটতো। পাশাপাশি কচ্ছপ, কুচিয়া, শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়াতে সমৃদ্ধ ছিল চলনবিল। এসব মাছের মধ্যে ৮০ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রাকৃতিক বিবর্তনের সাথে বিলে ব্যাপকহারে রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রয়োগে মাছসহ পরিবেশ বান্ধব অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার পথে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ সরকার চলনবিলের বুক চিরে সিরাজগঞ্জ থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত রেলসড়ক নির্মাণ করার পর থেকেই স্বাভাবিক পানিপ্রবাহে ভাটা পড়ে। ২০০৩ সালে সিরাজগঞ্জের নলকা-বনপাড়া মহাসড়ক নির্মাণের পর চলনবিলের পানিপ্রবাহে ভয়াবহ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এ মহাসড়ককে ঘিরে অসংখ্য রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বাঁধাগ্রস্ত হয় বিলের পানিপ্রবাহ। এছাড়াও খাল বা নদীর মুখ বন্ধ করে অসংখ্য স্থাপনা নির্মাণ হয়। ফলে পানির গতি বাঁধাগ্রস্ত হয়ে পলি জমে দ্রুত ভরাট হচ্ছে বিলের গভীরতা। আর নাব্যতা হারিয়ে সংকুচিত হচ্ছে বিলের আয়তন।  

উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের চলনবিলের অস্তিত্বে সর্বশেষ আঘাত হেনেছে পুকুর খনন। যত্রতত্র পুকুর খনন করে পানিপ্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানে বিস্তীর্ণ চলনবিলে অন্তত ৮/১০ হাজার পুকুর খনন করা হয়েছে।  

চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক এসএম মিজানুর রহমান বলেন, চলনবিলের প্রধান নদী বড়াল। ২২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীটি পদ্মা থেকে উৎপন্ন হয়ে চলনবিলের মাঝখান দিয়ে যমুনায় মিলিত হয়েছে। বড়ালের সঙ্গে প্রায় ১০০টি ক্যানেল ও প্রতিটি ক্যানেলের সঙ্গে ৫/৭ টা করে বিল যুক্ত আছে। অসংখ্য বিলের সমন্বয়ে চলনবিল। পদ্মা-যমুনায় যখন অনেক পানি হয় তখন বড়ালের মাধ্যমে চলনবিলে ছড়িয়ে যায়। এ নদীটির গতিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলনবিলকেই ধ্বংস করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে চারঘাটে ৫০০ ফুট চওড়া বড়াল নদীর উৎসমুখে বাঁধ দিয়ে ৩০ ফুট স্লইচ গেট নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২৫ ফিট গভীরতার নদীটিকে নিচ থেকে ঢালাই দিয়ে ৮ ফিট গভীর করা হয়। পাউবোর হিসেবে আগে ২১ হাজার কিউসেক পানি যেত বড়াল দিয়ে। স্লইচ গেট নির্মাণের পর সেখান দিয়ে পাঁচ হাজার কিউসেক পানি যেতে পারে। একটি খরস্রোতা নদীকে এভাবেই ধ্বংস করা হয়েছে। এর ৪৬ কিলোমিটার ভাটিতে আটঘড়ি নামে একটি স্থানে দুই দরজার আরেকটি স্লইচ গেট দেওয়া হলো। ফলে পানি প্রবাহের পরিমাণ আরও কমে গেল। এখান থেকেই ধীরে ধীরে নদী শুকিয়ে গেল। ১৯৮৫ সালে চারঘাট থেকে ১২৫ কিলোমিটার ভাটিতে চাটমোহরে এসে প্রভাবশালীরা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে পুরোপুরি আটকে দেয়। বড়াল তখন ভাগার হয়ে গেল, বড় বড় পুকুরে রূপ নীল। এরপর দহপাড়া নামে এক জায়গায় পুরো নদী চাপিয়ে এনে ১০ ফিট চওড়া এক দরজার একটি স্লইচ গেট দেওয়া হয়। যেটা এসে গুমানী নদীর সঙ্গে মিলিত হলো।  

চলনবিলের অপর গুরুত্বপূর্ণ নদী আত্রাই ভারত থেকে আসে। আটঘড়ি থেকে বড়াল নদী দুই ভাগ হয়। একটি বড়াল নাম নিয়ে চাটমোহরের দিকে চলে যায়। অপরটি নন্দকুজা নাম ধরে গুরুদাসপুর চাঁচকৈড় গিয়ে আত্রাইয়ের সঙ্গে মিলিত হয়। আত্রাই ও নন্দকুজার মিলিত ধারা চাঁচকৈড় থেকে গুমানী নাম নিয়ে বয়ে চলে। চাঁচকৈড়ের ৮ কিলোমিটার উজানে আত্রাই নদীতে রাবার ড্যাম দেওয়া হয়েছে। যাতে নদীর গতি প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে। এভাবেই চলনবিলের বৃহত্তম নদী দুটি ধ্বংস করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের সব নদী প্রবাহমান উত্তর-দক্ষিণ। কিন্তু ব্রিটিশরা পরিকল্পিতভাবে সব রাস্তাঘাট আড়াআড়িভাবে অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমে স্থাপন করে প্রতিটি নদীর গতিপ্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত করে গেছে। ১৯১৪ সালে চলনবিলের বুক চিরে রেল সড়ক নির্মাণ করে প্রথম পেরেক ঠুকেছে ওই ব্রিটিশরাই।  

এসএম মিজানুর রহমান বলেন, এ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সামগ্রিক চলনবিলের কথা না ভেবে নিজ নিজ এলাকার উন্নয়ন করেছেন। চলনবিলের খাল-বিল আর নদী ছিল সরকারি সম্পত্তি। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে প্রভাবশালীরা এসব সম্পত্তি নিজেদের করে নিয়েছেন এবং স্থাপনা নির্মাণ করে ধ্বংস করেছেন বিলটিকে। এরপর প্রভাবশালীরা পুকুর খনন শুরু করলো। ফলে পানি প্রবাহের ক্যানেল বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে বাধ্য হয়ে অন্যান্য কৃষকরাও পুকুর খনন শুরু করে।  

তিনি দাবী করেন, চলনবিল রক্ষায় হাওড়ের মতো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হবে। সব রাস্তা ভেঙে উড়াল সড়ক নির্মাণ করা প্রয়োজন। এছাড়াও চলনবিলকে ঘিরে যতগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় থাকতে হবে। চলনবিলের সামগ্রিক ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে উন্নয়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক দীপক কুমার কর বলেন, চলনবিলের মধ্যে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক হচ্ছে গোদের ওপর বিষফোঁড়া। এতে চলনবিল বিলুপ্তির অবস্থা আরও তরান্বিত করেছে। এটা উড়াল সড়ক হলে ভাল হতো। শুধু চলনবিলই নয় কোনো সুবৃহৎ জলাশয়ের ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে হলে সার্বিক পরিবেশ রক্ষার্থে উড়াল সড়কই করা উচিত।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো. ভিসি ভূ ও পরিবেশ বিজ্ঞানী মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, স্বাভাবিকভাবে ব-দ্বীপ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। নদীগুলোও তার স্থান পরিবর্তন করে। বঙ্গীয় ব-দ্বীপে স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটেছে, তার মধ্যে চলনবিল অন্যতম। তবে চলনবিল প্রকৃতিগতভাবে যতটুকু পরিবর্তিত হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে পরিবর্তিত হয়েছে। এখানে আশির দশকে সেচের উন্নয়নের নামে বিলাঞ্চলে ও নদীগুলোতে জলকপাট লাগিয়ে যেটা করা হয়েছে তাতে চলনবিলের চরম বিপর্যয় ঘটেছে।  

তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের নামে চারঘাটে বড়াল নদীর উৎসমুখে অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে নদীর গতি প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত করায় চলনবিলের প্রাকৃতিক প্রতিবেশ ও পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। নাটোর ও চাটমোহের কোন কোন স্থানে বড়াল নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুরে পরিণত করা হয়েছে। শুধু বড়াল নয়, করোতায়া, নন্দকুজা, নারদ, তুলসীগঙ্গা ও আত্রাই নদী প্রবাহে কৃত্রিমভাবে বাঁধার সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব কারণে চলনবিল আর বিল নেই, এখন ফসলের মাঠে পরিণত হয়ে গেছে।  

চলনবিল রক্ষা করতে হলে পানি প্রবাহের নদীগুলো প্রাকৃতিক নিয়মে বয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। জলাশয়ে পরিণত করতে চাইলে সব নদী-খাল ও বিল পুন:খনন করা দরকার। পানি প্রবাহে বাঁধা দিয়ে রাস্তা-ঘাট তৈরি করা যাবে না। কোনোভাবেই যত্রতত্র পুকুর খনন করতে দেওয়া যাবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।