ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৃথক ৫টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় পৃথক পাঁচ ঘটনায় কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেননি। পুলিশ বলছে, এসব ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উপজেলার ৫টি এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঈদের দিন বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে ২ পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের উভয় দলের ৩০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা ও সদরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এছাড়া একই দিন রাতে উপজেলার গুলবন্দী, কালামৃর্ধা ও মালিগ্রামে তুচ্ছ ঘটনা ও বাজি ফোটানো নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া আরও তিনটি জায়গায় সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ঈদের দিন (বৃহস্পতিবার) বিকেলে হামেরদী ইউনিয়নের সেনকান্দা গ্রামের শুকুরমিয়া তার স্ত্রী ও বোনকে নিয়ে মানিকদাহ ইউনিয়নের পুকুরিয়া রেললাইনের ওপর ঘুরতে যায়। এ সময় মানিকদাহ ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের এনামুলও পুকুরিয়া রেললাইনের ওপর ঘুরতে যায়। এ সময় হামেরদীর সেনকান্দা গ্রামের শুকুর আলী এনামুলকে বলে তুই আমাদের পিছে হাঁটতেছ কেন? এ নিয়ে কথা কাটাকাটির পর শুকুর আলী তার লোকজন নিয়ে পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে এসে এনামুলকে দোকান থেকে ধরে নিয়ে মারধর করে।
এনামুলকে মারধরের সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মানিকদাহ ইউনিয়নের ৪ গ্রামবাসী একত্র হয়ে হামেরদী ইউনিয়নের সেনকান্দার ১১ গ্রামবাসীর ওপর হামলা করে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতশত লোক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তখন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে পুকুরে বাজারের ১০-১৫টি দোকান ভাঙচুর ও ২-৩ টি দোকানের মালামাল লুটপাট করা হয়। সংঘর্ষে উভয় দলের অন্তত ৩০ জন লোক আহত হয়। আহতদের ভাঙ্গা ও সদরপুর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন ফরিদপুর -বরিশাল মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে ঈদের দিন রাতে ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা গ্রামের এক কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে চান্দা ইউনিয়নের পাঁচকুল গ্রামের আরেক কিশোর গ্যাং মালিগ্রামে ঘুরতে গিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ২ গ্রাম থেকে শত শত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এতে ১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আহত হয়।
এসব ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ জানান, ঈদের দিন (বৃহস্পতিবার) রাতে পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে কয়েক গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ হয়। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি শান্ত করে। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে, এসব ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া মালিগ্রাম, কালামৃর্ধা সহ কয়েক জায়গায় মারামারি সহ বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিনরাত কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৪
জেএইচ