নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষের জমি জোর করে দখল ও অবৈধভাবে বালু ভরাটের প্রতিবাদ করার জেরে এক যুবলীগ নেতার প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়াসহ যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের পেশাগত ও জনপ্রিয়তার ইমেজকে সংকটে ফেলতে এবং রাজনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে তাঁর বিরুদ্ধে হয়রানির উদ্দেশ্যে এমন মারাত্মক রকমের মানহানিকর ও অসত্য অভিযোগ তুলে ধরে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে ভূমিদস্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদে হানিফ মিয়ার বরাত দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, ‘দাউদপুর ইউনিয়নের শিমুলিয়া, দাউদপুর, বেলদি, দুয়ারা, কালনি, কুলাদি, খইসাইর, কামতা, খাস দাউদপুর, বড় আমদিয়া, জিন্দা, বইলদা, ভাটপাড়া, পুটিনাসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি না কিনে বালু ফেলে দখল করা হচ্ছে। আর বালু ভরাট ও দখলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার। এতে করে দাউদপুর ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ ফুঁসে উঠেছে। নিরীহ এলাকাবাসী ও জমির মালিকদের পক্ষে কথা বলায় বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর মাস্টার তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তার ভাতিজা রাব্বি মিয়াকে তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে (ঢাকা মেট্রো গ ২১-৯৬৮৫) বইলদা এলাকায় এক আত্মীয়ের পাঠানো হয়। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীর মাস্টারের নেতৃত্বে খোকন, জালাল, বাবুল, সেকান্দর, শাহেদ, সারোয়ার,মাসুম, শুভ ও সজলসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল সন্ত্রাসী পিস্তল রামদা চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে কারটির গতিরোধ করে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে রাব্বির মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে গাড়ি থেকে নগদ দুই লাখ টাকাসহ মূল্যবান কাগজপত্র লুটে নেয়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে লেলিহান শিখা পুরো গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে গেলে এলাকার মানুষ এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। তবে এর আগেই পুরো গাড়িটি পুড়ে যায়। ’
তবে অনুসন্ধানে উল্লিখিত অভিযোগের সঙ্গে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এমন কাল্পনিক অভিযোগ এনে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। করা হচ্ছে নামে-বেনামে মিথ্যা অভিযোগও।
গণমাধ্যমের সামনে আসা ও আনীত অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার। তিনি বলেন, একটি কুচক্রি মহল আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ এনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে চলেছে, যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছি। একই সঙ্গে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোকে অনুরোধ করছি অসত্য তথ্য সম্বলিত মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন না করতে।
আইন উপেক্ষা প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, মাদক, জুয়া, ভূমিদখল, বৃক্ষ নিধনসহ যে কোনো অপরাধের প্রতি ঘৃণা রেখেই আমার পথ চলা। এছাড়া আমি একজন নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান। সরকার আমাকে গেজেট দিয়েছে। তাই আইন অনুসারে নিয়ম মেনে নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব থেকে সততা, নিষ্ঠা ও সাহসিকতার সহিতই সব কাজ পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই যে, সম্প্রতি সমাজের কিছু কতিপয় ব্যক্তি ও আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইশারায় মিথ্যা ঘটনার বিবৃতি স্থাপন করে আমার বিরুদ্ধে মারাত্মক রকমের অপপ্রচার চালাচ্ছে। এগুলো কি অপরাধ না? সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কেও সবার জানা উচিত, মানা উচিত। দেখা যাচ্ছে, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয়ে প্রতিপক্ষের বেঁধে দেওয়া মিথ্যা স্থাপনকৃত অভিযোগ নামে-বেনামে প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমে মারাত্মক রকমের মানহানিকর ও মিথ্যা ঘটনার বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। তথ্য যাচাই-বাছাই কিংবা অনুসন্ধান না করেই সেই মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতেই সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হচ্ছে এর স্বপক্ষে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে পারবে না অভিযোগকারী বা অভিযোগকারীরা। কেননা অভিযোগের জায়গাগুলোই কাল্পনিক। শুধু আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার মানসিকতা হতেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে, চলছে অপপ্রচারের মিশন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, অপপ্রচার করা হচ্ছে। আর অপপ্রচার ছড়িয়ে দেওয়া গেলেও কখনোই প্রতিষ্ঠিত হয় না। প্রয়োজনে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয় লাভ করেন। তিনি তার পরিশ্রম, সাহস, ইচ্ছাশক্তি, একাগ্রতা আর প্রতিভার সমন্বয়ে সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য অবিরত কাজ করে যাচ্ছেন। রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদান, সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে এলাকায় নিজের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৪
এইচএ