ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যেন ‘চুলা জ্বলছে’, ঢামেকে গরমে অতিষ্ঠ রোগীরা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
যেন ‘চুলা জ্বলছে’, ঢামেকে গরমে অতিষ্ঠ রোগীরা

ঢাকা: তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।

গরমের তীব্রতায় ছোট-বড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সিলিং ফ্যান চললেও গরমে যন্ত্রণা কমছে না।  

ফ্যানের বাতাস মেঝে ও শয্যায় থাকা রোগী পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। এ পরিস্থিতিতে রোগীদের একমাত্র ভরসা নিজেদের কেনা টেবিল ফ্যান ও হাতপাখা।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবন ও পুরাতন ভবনের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।  

রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গরমে টেকা যাচ্ছে না। ওয়ার্ডের ভেতরে মনে হয় চুলা জ্বলছে। শরীর তাপে পুড়ে যাচ্ছে। ওয়ার্ডের সিলিং ফ্যান শুধু ঘুরছেই। বাতাস শরীরে লাগছে না।

তারা জানান, সিলিং ফ্যানের বাতাস রোগী পর্যন্ত পৌঁছায় না। তাই তাদের সবার ভরসা বাইরে থেকে কিনে আনা টেবিল ফ্যান ও হাতপাখা। টেবিল ফ্যানের সংযোগ পেতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।  

ঝিনাইদহ থেকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী আলামিন। পুরাতন ভবনের ঢাল সিঁড়িতে ওঠার পাশেই মেঝেতে তাকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তীব্র গরমে প্লাস্টিকের হাতপাখা দিয়ে টানা বাতাস করে যাচ্ছেন তার মা ও ভাই।

আলামিনের মা ডালিয়া বেগম বলেন, রাস্তায় যেমন তেমন গরম হলেও হাসপাতালে ভেতরে সেদ্ধ হওয়ার উপক্রম। যেন চুলা জ্বলছে।  রোগী নিয়ে ওয়ার্ডের ভেতরে গাদাগাদি করে থাকা যায় না। তাই একটু প্রশান্তির জন্য খোলা জায়গায় ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছি। এখানে উপরে সিলিং ফ্যান নেই। ছোট টেবিল ফ্যান কিনে এনেছি। সেটির জন্যও লাইনের ব্যবস্থা নেই। অবশেষে দুটি প্লাস্টিকের হাত পাখা কিনে এনে বাতাস করছি।  

একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি প্রবীর (৬০) নামে এক রোগী। তার ছেলে রাহুল বলেন, বাইরের চেয়ে হাসপাতালে ভেতরে তিনগুণ গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে বাবা বারবার বলছেন, যেভাবে হোক এসি কেবিনের ব্যবস্থা করতে। তা না হলে বাসায় চলে যেতে চাচ্ছেন।  

প্রবীরের মাথার সামনে টেবিল ফ্যান ধরে রাখতে দেখা যায় তার স্ত্রীকে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আসলে গরমে মানুষ কষ্ট করছে। এই গরম থেকে রেহাই পাচ্ছেন না হাসপাতালে রোগীরাও। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব ওয়ার্ডে সব সিলিং ফ্যান চালু রাখা হয়েছে। অনেক জায়গায় পুরোনো ফ্যান খুলে নতুন ফ্যান লাগানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ওয়ার্ডের সিলিং অনেক উপরে থাকায় ফ্যানের বাতাস রোগীর গায়ে পৌঁছাতে পারে না। এ কারণে বেশ কিছু ওয়ার্ডে লোহার পাইপের সঙ্গে সিলিং ফ্যান জোড়া দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক প্লাগগুলো সচল রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন রোগীরা বাইরে থেকে কিনে আনা তাদের ছোট ছোট ফ্যানগুলো চালু রাখতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
এজেডএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।