ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মিয়ানমার থেকে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি, ঘাটে অপেক্ষায় স্বজনেরা

সুনীল বড়ুয়া,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
মিয়ানমার থেকে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি, ঘাটে অপেক্ষায় স্বজনেরা

কক্সবাজার: মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগের পর আজ দেশে ফিরছেন ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক। স্বজনদের ভাষ্যমতে, এদের বেশিরভাগই অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় মিয়ানমার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন।

তবে কবে নাগাদ তারা কক্সবাজারে পৌঁছাবেন তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

এদিকে মিয়ানমারে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের গ্রহণ করতে সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বাঁকখালী নদীর মোহনায় বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে অপেক্ষা করছেন অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দুপুর দুইটার দিকে তাদের বহনকারী জাহাজ ঘাটে এসে পৌঁছাবে।  

রামুর রাজারকুলের সিকদারপাড়ার বাসিন্দা নুরুল আমিন (৫৭) বলেন, মিয়ানমারে আটকা পড়েছে আমার ছেলে রাশেদ উল্লাহ। রামু মনসুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত সে। গত বছর রমজানে ফজরের নামাজ শেষে আমরা বাপ-ছেলে মসজিদ থেকে ঘরে ফিরি। এ সময় ছেলের মোবাইলে একটি ফোন এলে সে বের হয়ে যায়। পরে জানতে পারি দালালেরা তাকে নিয়ে গেছে। এর চারদিন পর পার্শ্ববর্তী সাইফুল (দালাল) ফোন করে সাড়ে চার লাখ টাকা দাবি করে। তার সঙ্গে আবুল কালাম নামে আরও একজন দালাল আছেন। এ দুই দালালকে আমি কয়েক দফায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। ছেলে মিয়ানমারে ধরা পড়েছে জানার পর অনেক জায়গায় ধরনা দিয়েছি। আজ আসবে জেনে এখানে অপেক্ষা করছি।

একইভাবে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিওটিএ ঘাটে অপেক্ষা করছেন কলেজশিক্ষার্থী থোয়াই লা অং মারমা। তার দুই বোন মিয়ানমার থেকে ফিরবে, এই অপেক্ষায়।  

থোয়াই লা অং মারমা জানান, ‘গেল দুই বছর আগে সীমান্ত লাগোয়া মন্দিরে গিয়েছিল তার দুই বোন ল্হাচিং মারমা (৩৬) ও এম্যানু মারমা (২৩)। সেখান থেকে সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি তাদের ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এখন তারা সরকারি সহযোগিতায় দেশে ফিরছে। ভালো লাগছে।

টেকনাফের সদরের রাজারছড়া এলাকার মোস্তাক আহমেদ বলেন, আমার ছেলে নোমানকে ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি হোয়াইক্ষ্যং উনছিপ্রাং এলাকার হোসাইন দালাল মালয়েশিয়া পাঠানোর নামে নিয়ে যায়। ৩ মাস ধরে ছেলের সন্ধান পাইনি। পরে জানতে পারলাম ছেলে মিয়ানমারের কারাগারে আছে।  

জানা যায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতোয়ে কারাগার থেকে বুধবার ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরছেন। তাদের নিয়ে মিয়ানমারের জাহাজ চিন ডুইন সিতোয়ে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে কক্সবাজার আসছে। আজ দুপুর নাগাদ জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছাবে। এরপর বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের হস্তান্তর করবে।  

এই ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার, ৩০ জন বান্দরবান, সাতজন রাঙামাটির এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩,২০২৪ 
এসবি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।