ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাগুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
মাগুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

মাগুরা: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাগুরা সদরের চাউলিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একাধিক দোকান ও বাড়িতে অগ্রিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত কয়েকজনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এ সংঘর্ষ বাঁধে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে দাউদ মোল্লা ও আতিয়ার মোল্লার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আতিয়ার মোল্লার ভাতিজা মহিদুলের ওপরে হামলা করে দাউদ মোল্লার লোকজন। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে আতিয়ার মোল্লার লোকজন রাতেই দাউদ মোল্লার ওপর হামলা করে। গুরুতর আহত দাউদ মোল্লাকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

এ ঘটনার পর ক্ষিপ্ত হয়ে দাউদ মোল্লার লোকজন আতিয়ার মোল্লা সমর্থিত কয়েকজনের দোকান ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আতিয়ার মোল্লা সমর্থিত ইসহাক মোল্লার একটি মুদি দোকান, আকরাম মোল্লার বাড়ি, বিলাল খাঁর গোয়ালঘর ও আরব আলীর পানের বরজে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তন্নু খা, স্বাধীন খা, হাফেজ ও ফারুক মোল্লার বাড়ি ভাঙচুর করে। রাত সাড়ে দশটার সময় ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।

আহতদের মধ্যে মোজাম মন্ডল ও নিজাম নামে দুজনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, মিলন বিশ্বাসকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও দাউদ মোল্লাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়া উজ্জ্বল নামে একজনকে শহরের কোনো একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার রুহুল আমিন বলেন, রাত সাড়ে দশটার দিকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফিরতে রাত তিনটা বেজে যায়। আগুনে একটি মুদি দোকান, মুদির দোকানের পাশে অবস্থিত একটি গোয়ালঘর ও তার একটু দূরে একটি বসতবাড়ি এবং ওই বাড়িতে থাকা মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে।

আগুনে পোড়া দোকানের মালিক ইসহাক মোল্লা বলেন, এলাকার মারামারির খবরে দোকান বন্ধ করে ফেরার পরপরই দাউদ মোল্লা সমর্থিত লোকজন আমাদের দোকানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে দোকানে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা, টিভি ফ্রিজসহ দোকানের যাবতীয় মালামাল পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সংঘর্ষে জড়িত এক পক্ষের মাতব্বর আতিয়ার মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মধ্যে সামাজিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বুধবার বিকেলে দাউদ মোল্লার লোকজন আমার ভাতিজা মহিদুলের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় আমাদের লোকজন দাউদ মোল্লার ওপর হামলা করে। এপর তারা ওই রাতেই আমাদের লোকজনের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে আমাদের কয়েকজনকে মাগুরা ও ফরিদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষে জড়িত অন্য পক্ষের মাতব্বর দাউদ মোল্লা আহত হয়ে ঢাকাতে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, দুটি পক্ষের সামাজিক আধিপত্যকে বিস্তার করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশি মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।