নীলফামারী: ধান পাকেনি নীলফামারী জেলায়। কোথাও ধানের থোর এসেছে, কোথাও কলা পাকার মতো হয়েছে।
এবার প্রচণ্ড তাবদাহ ও খরার কারণে সেভাবে সেচ দিতে পারেনি জেলার কৃষকরা। টানা খরার কবলে পড়ে ইরি-বোরোর আবাদ করতে কৃষকদের খরচ বেড়েছে সেচে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক কষ্টে ক্ষেত বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন তারা। তারপরও অনেক জায়গায় ইরি-বোরো ক্ষেত পুড়ে গেছে। এমন অবস্থায় ইরি-বোরো এবারে চিটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিট রাজিবের কৃষক ফিলিপ জানান, এ বছরের মতো খরা কোনো বারেই দেখেননি তিনি। প্রতিদিনই ইরি-বোরো জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। তারপরও পানি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। রেশনিং পদ্ধতিতে সেচ মালিকরা পানি দিয়েও কুলাতে পারেননি। এ বছর ফলন কম হবে এমনটি বলেছেন তিনি।
জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুরের কৃষক আবেদ আলী জানান, এবারের টানা খরায় সেচ ও কীটনাশক দিয়েও খুব একটা কাজ হয়নি। ফসলের অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি বলেন, ইরি-বোরো ধান এখন আধাপাকা আছে। এসব ধান ১০/১৫ দিনের মধ্যে কাটার উপযোগী হবে। এছাড়া এই জনপদের কৃষি শ্রমিকরা আগাম জাতের ধান কাটতে বাইরের জেলায় গেছেন।
ধানের ফুল আসার জন্য সর্বোচ্চ সহনীয় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, নীলফামারীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৪০ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ অবস্থায় ঝড় বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে শঙ্কা চাষিদের।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর নীলফামারী জেলায় ৮১ হাজার ৮৫৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এবারের প্রচণ্ড তাপদাহ ও বৃষ্টির অভাব ছিল ইরি-বোরো ক্ষেতে। তাপ পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামীতেও এমন প্রাকৃতিক বৈকল্য বাড়বে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গবেষণা জরুরি বলে মনে করছেন জেলার ওই কৃষি কর্মকর্তা। প্রচণ্ড তাপের কারণে কৃষকের ফসল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য তাদেরকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২৪
এফআর