ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিকটিমের বাবাকে মারধরের অভিযোগে স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) পুলিশ ভিকটিমের পরিবারকে বাড়ি ছাড়া করা মাতুব্বরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।
এর আগে সোমবার (৬ মে) রাতে থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রতিবেশী জুনায়েত শেখের (১৬) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে জুনায়েত। গত বছরের ২০ নভেম্বর ওই কিশোরীর বাবা-মা বাড়ি না থাকার সুবাদে ওই রাতে কিশোরীকে ডেকে নিয়ে পরমেশ্বরদী গ্রামের মনমত মণ্ডলের মেহেগনি বাগানে নিয়ে জুনায়েত, তার বন্ধু জুবায়ের ফকির (১৫) ও তরিকুল ফকির (১৬) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। সম্প্রতি ওই কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। চলতি বছরে গত ২৯ এপ্রিল কিশোরীর মা শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে কিশোরী গর্ভবতী হওয়ার পুরো বিষয়টি তার বাবা-মাকে খুলে বলে। ঘটনা শুনে কিশোরীর বাবা গ্রামের মাতুব্বর হারুন শেখের কাছে বিচার চেয়ে নালিশ দেন। হারুন শেখ (৪৮) কোনো বিচারের ব্যবস্থা না করে উল্টো মারধর করে ভিকটিমের পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করে।
বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানতে পেরে গত রোববার (৫ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গ্রামের তিনজনকে আটক করে। সোমবার (৬ মে) বিকেলে ওই কিশোরী ও তার বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়। পরে থানায় এসে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে পরমেশ্বরদী গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে জুনায়েত, বিল্লাল ফকিরের ছেলে জুবায়ের ফকির (১৫), আলফাডাঙ্গা উপজেলার ভেন্নাতলা গ্রামের তৈয়েবের ছেলে তরিকুল ফকির (১৬) ও পরমেশ্বদী গ্রামের সেকেন শেখের ছেলে হারুন শেখকে (৪৮) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯ (৩) তৎসহ ৩২৩/৫০৬ ধারায় মামলা করেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ১৪। মামলার পর ৪ নম্বর আসামি হারুনকে গ্রেপ্তার করে ৭ মে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পরে ভিকটিমদের গ্রাম ছাড়া করা হয়। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে এবং বিষয়টি এলাকায় গুঞ্জনের ভিত্তিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে এলাকার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। তার মধ্যে হারুন শেখের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় এবং তার তথ্য অনুযায়ী ভিকটিম ও তার মাকে পাশের আলফাডাঙ্গা থানার টিটা থেকে এবং ভিকটিমের বাবাকে ফরিদপুর সদর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
ওসি আরও জানান, এরপর বিচারের জন্য মামলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মঙ্গলবার ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। মামলার ৪ নম্বর আসামি হারুনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৪
এসআরএস