ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কারাবন্দি জেএমবি নেতা মন্তেজার রহমানের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
কারাবন্দি জেএমবি নেতা মন্তেজার রহমানের মৃত্যু

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বাসিন্দা কারাবন্দি জঙ্গি নেতা মন্তেজার রহমান মারা গেছেন।  

মঙ্গলবার (১৪) বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক)  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

বুধবার (১৫ মে) ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।  

জয়পুরহাটের জেল সুপার রীতেশ চাকমা জানান, জঙ্গি নেতা মন্তেজার রহমান ২০০৭ সাল থেকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। তিনি ক্ষেতলাল উপজেলার উত্তর মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আঞ্চলিক নেতা ছিলেন।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, মন্তেজার রহমান কারাবন্দি অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে হার্ট, কিডনির সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। গত সোমবার তিনি কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। ১৪ মে দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।  

১৫ মে দুপুরে মন্তেজারের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনরা তাকে দাফনের জন্য কবরস্থান প্রস্তুত করছেন। এ সময় বিভিন্ন স্থান থেকে পরিচিত জনরা এসেছেন তাকে দেখতে। তবে এ প্রতিবেদন বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটে লেখার সময় পর্যন্ত মন্তেজার রহমানের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়নি।  

পরিবারের সদস্যরা জানান, মরদেহ পৌঁছানোর পর জানানো হবে দাফনের সময়।  

পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার উত্তর মহেশপুর গ্রামে জঙ্গি নেতা মন্তেজারের বাড়িতে জেএমবির শীর্ষ নেতারা গোপনে বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে রাতেই বাড়িটি ঘেরাও করে জয়পুরহাট সদর থানার পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জেএমবির সদস্যরা হামলা চালিয়ে সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে গুরুতর জখম করেন। এ সময় তিনটি শর্টগান, ৪৫টি গুলি ও একটি ওয়াকি-টকি ছিনিয়ে নেন তারা। পরে ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে ১৯ জঙ্গিকে আটক করে পুলিশ।

ওই ঘটনায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। এজাহারে অস্ত্র লুট, পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশে জখম ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৩ আসামি ২০০৪ সালের বিভিন্ন সময়ে আদালত থেকে জামিন পান। এর পর থেকেই তারা পলাতক। তবে ২০০৭ সাল থেকে মন্তেজার রহমান কারাগারে ছিলেন। ‍
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দিনাজপুর অঞ্চলের পরিদর্শক জালাল উদ্দীন মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ৬০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু হামলার সময় আসামি মন্তেজারের বাড়ির পাশে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার হলেও বিস্ফোরক আইনে কোনো মামলা করেনি পুলিশ। এ জন্য ২০০৯ সালের ১২ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সিআইডিকে আবার তদন্তের আদেশ দেন।

সিআইডির দিনাজপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার শেখ আহসান-উল কবীর অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করে ২০১০ সালের ২৫ মে ৬০ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আদালতে পৃথক আরেকটি অভিযোগপত্র দেন। দুটি মামলার অভিযোগ গঠন ও বিচার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Veet