ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে ৫৪১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
বরিশালে ৫৪১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

বরিশাল: সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) বেলা ১১টায় বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় একথা জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতির পাশাপাশি জুম ভিডিও কনফারেন্সে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা সংযুক্ত ছিলেন।

সভায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে রূপ নিলে সেটি মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা হয়। যেখানে সব ধরনের সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া পর্যাপ্ত শুকনো খাবারের পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধিকরণ ওষুধ, মোমবাতি, দিয়াশলাই, খাবার স্যালাইন, প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা রাখা; বরিশাল জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত বহুতল ভবন, অফিসসমূহ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলার সব স্থানে মাইকিং ও আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য প্রচার করা; প্রাণিসম্পদ রক্ষায় গুরুত্বারোপ করা এবং পর্যাপ্ত গো-খাদ্যের ব্যবস্থা রাখা; সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা; জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খোলা; বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সভায় জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বরিশালে এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, যার মধ্যে ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। বাকি ধান অল্প সময়ের মধ্যে কাটা হবে। তাই ফসলের ক্ষতির শঙ্কা কম।

আর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কোরবানি যোগ্য পশুসহ সব প্রাণীকে নিরাপদে রাখার জন্য এরই মধ্যে খামারিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সভায় সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান জানিয়েছেন, ৯৮টি মেডিকেল টিম করা হলেও জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। তাই দুর্যোগকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

সভা শেষে জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বরিশাল জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, প্রয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি ভবনগুলোও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। চাল ছাড়াও অন্যান্য শুকনো খাবারের পর্যাপ্ত মজুদ রাখা হয়েছে। জেলায় নগদ বরাদ্দ হয়েছে ৫ লাখ টাকা, যা উপজেলা পর্যায়ে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো সামগ্রী তা দিয়ে কেনা যাবে। আর এর বাইরে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক মন্ত্রণালয় থেকে আরও বরাদ্দ আনা যাবে।

তিনি বলেন, জেলার সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তারা ১০টি উপজেলায় ৯৮টি মেডিকেল টিম গঠন করেছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, আনসার, পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বিগত দিনের ন্যায় সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে।

তিনি বলেন, জোয়ারের সময় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও প্রাণীদের নিরাপত্তায় আগাম নজরদারি রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে মানুষ ও প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বরিশাল জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মিলিয়ে ৫৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
এমএস/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।