ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড ২০ গ্রাম, নিহত ৩ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৪
ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড ২০ গ্রাম, নিহত ৩ 

ঠাকুরগাঁও: মাত্র ১২ মিনিটের ভারী বৃষ্টি ও তুমুল ঝড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়েছে।  

পাড়িয়া ইউনিয়নের তিলকড়া, শালডাঙ্গা, বঙ্গভিটা, লোহাড়া, বামুনিয়াসহ ১২টি গ্রাম এবং বড়বাড়ী ইউনিয়নের বেলহাড়া, বেলবাড়ী, বটের হাট, হরিপুরসহ ০৮টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এসব গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাটের।  

এদিকে ঝড়ের কবলে দুই নারী ও জমে থাকা পানিতে ডুবে মারা গেছে আড়াই বছরের এক শিশু।  

নিহতরা হলেন - উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের পইনুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), একই গ্রামের দবিরুল ইসলামের স্ত্রী জাহেদা বেগম (৫০) এবং একই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর নয়াপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলামের আড়াই বছরের ছেলে নাঈয়ুম।  

শনিবার (১ জুন) ভোর এ ভয়াবহ ঝড়ের কবলে পড়েন বালিয়াডাঙ্গীর বাসিন্দারা।  

স্থানীয় বাসিন্দা পইনুল ইসলাম বলেন, সকালে ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদে থাকা অবস্থায় ঝড় শুরু হয়। বাড়িতে ছুটে এসে স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করি। পরে বাতাসে উড়ে এসে বারান্দায় পড়ে থাকা টিন ও ছাউনি সরিয়ে দেখি নিচে চাপা পড়ে আছে স্ত্রী। তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।  

পাড়িয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের দফাদার আজিজুর রহমান জানান, ঝড়ের সময় বারান্দায় বসে ছিলেন দবিরুল ইসলামের স্ত্রী জাহেদা। মেঘের গর্জন আর ঝড়ে গাছপালা উড়তে দেখে বারান্দাতেই মারা যান তিনি।  

দবিরুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। ঝড়ের সময় ভয়ে স্ট্রোক করেছেন বলে ধারণা করছি।  

লালাপুর নয়াপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, বাড়ির পাশে গর্তে বৃষ্টির পানি জমেছিল। খেলতে গিয়ে আমার ছেলে নাঈয়ুম পড়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজনের নজরে এলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
 
জানা গেছে, বড়বাড়ী ইউনিয়নের আধারদিঘী বাজারে ৫টি দোকান এবং দুটি হোটেলের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে। ঘরের টিন নষ্টসহ সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী এবং সিমেন্টের ব্যবসায়ীর ৫ লাখের বেশি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

আধাদিঘী বাজারের ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, বাজারে শতবর্ষী কিছু আমগাছ ছিল। ঝড়ে সেই গাছগুলো বড় বড় ডাল ভেঙে পড়েছে দোকানগুলোর টিনের ছাউনির ওপর। এতে দোকানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এবং আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ করছে।  

ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন ঝড়ে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৪
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।