ঢাকা: শৃঙ্খলার মান ধরে রেখে নবনিযুক্ত ফায়ারফাইটার ও ড্রাইভারদের দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার (২ জুন) বিকেলে ঢাকার মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা ৬৩তম ব্যাচের ফায়ারফাইটার, প্রথম ব্যাচের নারী ফায়ারফাইটার ও ৫৩তম ব্যাচের ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দানকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, অধিদপ্তরের পরিচালক, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষ, নবীন ফায়ারফাইটারদের অভিভাবকসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়ি ট্রেনিং কমপ্লেক্সে প্রবেশ করলে বিউগলের সুর মূর্ছনা ধ্বনিত হয়। এ সময় অধিপ্তরের মহাপরিচালক প্রধান অতিথিকে স্বাগত জানিয়ে অভিবাদন মঞ্চ যানন। পতাকাবাহী কনটিনজেন্টসহ চারটি কন্টিনজেন্টের সদস্যরা প্রধান অতিথিকে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জ্ঞাপন করেন।
প্রধান অতিথি কনটিনজেন্ট পরিদর্শন করেন, মার্চ পাস্ট প্রত্যক্ষ করেন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। দীর্ঘ ছয় মাসের প্রশিক্ষণকালীন সার্বিক বিচারে শ্রেষ্ঠ হওয়া তিনজনকে চৌকস পদক পরিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে নবীন ফায়ার ফাইটার ও ড্রাইভারদের শপথবাক্য পাঠ করান ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অ্যাডজুটেন্ট মোহাম্মদ মামুন।
প্রধান অতিথি সমাপনী অনুষ্ঠানের কেক কাটেন। এ সময় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির হাতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্মৃতির নিদর্শন হিসেবে শুভেচ্ছা ক্রেস্ট তুলে দেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
প্রধান অতিথির ভাষণে আসাদুজ্জামান খান ফায়ার সার্ভিসের ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩’ অর্জন এবং আজীবন রেশন বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করায় তিনি নীবন ফায়ারফাইটার ও ড্রাইভারদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন, সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের কর্মী হিসেবে আপনাদের শৃঙ্খলার সঙ্গে মানুষের জান-মাল রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রশিক্ষণকালে আপনারা নিজেদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন। এখন নিজ নিজ কর্মস্থলে অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে।
প্রথম ব্যাচের নারী ফায়ারফাইটারদের উদ্দেশে প্রধান অতিথি বলেন, আপনারা জানেন, দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষের যৌথ অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। আগুন নেভানোর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা ‘ফায়ারম্যান’ পদের নাম ‘ফায়ারফাইটার’ করেছি। এর পরপরই প্রথমবারের মতো ফায়ার সার্ভিসে আপনাদের ১৫ জনকে নারী ফায়ারফাইটার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আজ আপনারা সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করলেন। আমি আশা করবো, অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে আপনারাও সাফল্যের সাক্ষর রাখবেন। আর আগামীতেও নারী ফায়ারফাইটার নিয়োগের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।
প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর সেন্টু চন্দ্র সেন। অনুষ্ঠানের ধারা বর্ণনা করেন উপসহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান শিকদার, সিনিয়র স্টেশন অফিসার রায়হানুল আশরাফ ও ডা. মোস্তফা আব্দুর রহিম ও স্টেশন অফিসার আসাদুজ্জামান।
একই সময় রংপুর বিভাগ, খুলনা বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগেও প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার ২১০ জন ফায়ারফাইটার, ১৫ জন নারী ফায়ারফাইটারসহ সব মিলিয়ে মোট ৪৫১ জন ফায়ারফাইটার ও ৮৪ জন ড্রাইভার সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করে কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২৪
এজেডএস/এইচএ/