বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি ফেরত আসায় ১৩ বছরের মেয়েকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
তাই উপজেলা প্রশাসন সোমবার (৩ জুন) হাবিবা নামে ওই কিশোরী, তার বাবা মো. জামাল হাওলাদার ও মা মারুফা বেগমকে ডেকে পাঠায়।
এসময় হাবিবাকে আর নির্যাতন করা হবে না, ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত স্বামীর বাড়ি অথবা স্বামী এই বাড়িতে আসতে পারবে না এবং হাবিবার লেখাপড়া ও মাদরাসায় যেতেও বাধা দেওয়া হবে না মর্মে তার মা-বাবা লিখিত মুচলেকা দেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা জানান, সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে আমরা ওই ছাত্রীর বাড়িতে যাই। তখন তাদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় বাগধা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে তাদের খবর দিয়ে অফিসে আসতে বলা হয়। এসময় হাবিবার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা রাখা হয়। হাবিবার ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাকে স্বামীর বাড়ি পাঠানো যাবে না এবং তার লেখাপড়ায় বাধা দেওয়া যাবে না।
হাবিবার বাবা মো. জামাল হাওলাদার ও মা মারুফা বেগম বলেন, আমরা মেয়েকে বাল্যবিয়ে ও শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে যে মারধর করেছি তা আমাদের ভুল হয়েছে। আজ আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পেরেছি। আমরা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে লিখিত মুচলেকা দিয়েছি। আমরা আর কোনোদিন এমন ভুল করব না। আমাদের ভুল আমরা বুঝতে পেরেছি।
ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার উপস্থিতিতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে বসে সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে হাবিবার পরিবার মুচলেকা দিয়েছে।
উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের মেয়ে হাবিবাকে (১৩) তার পরিবার দুই মাস আগে জোর করে একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের মো. শাহজাহান মোল্লার ছেলে মো. সাজিদ মোল্লার কাছে বিয়ে দেয়।
দুই মাসের মাথায় ওই কিশোরী বাবার বাড়ি চলে আসে। সে আর স্বামীর বাড়ি যাবে না বলেও জানায় মা-বাবাকে। এতে তার বাবা-মা ক্ষিপ্ত হয়ে শিকলে হাত-পা বেঁধে শনিবার (১ জুন) রাতে ঘরের মধ্যে হাবিবাকে নির্যাতন করে। ওই নির্যাতনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তা নজরে আসে প্রশাসনের।
আরও পড়ুন: জোর করে বিয়ে, ফিরে আসায় ১৩ বছরের মেয়েকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন মা-বাবার
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৪
এমএস/এইচএ/