ঢাকা, সোমবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জুন ২০২৪, ১৬ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র

কয়লা আমদানিতে এক কোম্পানিকে সুযোগ দিতে বিশেষ টেন্ডার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৭ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
কয়লা আমদানিতে এক কোম্পানিকে সুযোগ দিতে বিশেষ টেন্ডার

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহের দরপত্র প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে বাতিল হওয়া এক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সভা করার অভিযোগ এসেছে প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (সিপিজিসিবিএল) বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি ২৭ মে প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়নকারী কমিটি ইউনিক সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃত্বে থাকা কনসোটিয়ামের আর্থিক প্রস্তাবনা বাতিল ঘোষণা করে।

বাতিলকৃত আর্থিক প্রস্তাবনাটি পুনর্বহালের জন্য সিপিজিবিএল’র একটি মহল জোরালো চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, বাতিলকৃত আর্থিক প্রস্তাবনা পুনর্বহালের মাধ্যমে ওই কনসোটিয়ামকে কয়লা আমদানির সুযোগ দিতে সম্প্রতি ‘বিশেষ সমঝোতা’ সভা করেছে।
বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দিতে সভা প্রসঙ্গে সিপিজিসিবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কালাম আজাদ  বলেন, ‘এরকম কোনো অভিযোগ নেই। এখনো দরপত্র মূল্যায়ন চলছে। মূল্যায়ন চলাকালীন এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না। ’

কক্সবাজারের মহেশখালীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হচ্ছে চলতি মাসের শেষ দিকে। জাপানের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত দুই ইউনিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর দ্বিতীয় ইউনিটও পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলেও প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে একই মাসের ২৬ তারিখ থেকে।

অভিযোগ রয়েছে, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি চার প্রতিষ্ঠান যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রস্তাবনা দাখিল করলেও ‘আর্থিক সক্ষমতা নেই’ অজুহাতে তিন প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২৭ মে কারিগরি কমিটির সভায় চারটি কনসোটিয়ামের সবগুলোর আর্থিক প্রস্তাবনা বাতিল হয়।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় বাতিল হওয়া তিন কনসোটিয়ামের একটি গত ২৯ মে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে দরপত্র পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি কোনো প্রকার উত্তর পায়নি।

দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী, কমপক্ষে ১২ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানির অভিজ্ঞতার শর্ত উল্লেখ ছিল, যা কয়লা আমদানি সংশ্লিষ্ট দরপত্রের জন্য একটি প্রাসঙ্গিক শর্ত। কিন্তু একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিক সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে উক্ত শর্তটি শিথিল করে ১২ লাখ মেট্রিক টন লোহা, সার, কেমিক্যাল, সিমেন্ট অথবা খাদ্য শস্য আমদানির অভিজ্ঞতাকে যোগ্যতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা একটি অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে।

দরপত্রে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি কনসোটিয়ামের আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহের অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, কয়লা সরবরাহে আমাদের ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও সাফল্য বিবেচনা না করেই এবং বিস্তারিত কোনো কিছু অবগত না করেই এবং কারিগরি বিষয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন না করে এবং কোনো প্রকার ব্যাখ্যার সুযোগ না দিয়েই আমাদের ‘কারিগরিভাবে অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়।

একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের দরপত্রকে কারিগরিভাবে যোগ্য ঘোষণা করে প্রতিযোগিতামূলক এবং রাষ্ট্রের জন্য লাভজনক না হওয়া সত্ত্বেও একক প্রতিষ্ঠানকে ‘পক্ষপাতিত্বমূলক’ভাবে কার্যাদেশ প্রদানের মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়।

দরপত্র প্রক্রিয়ার কারিগরি কমিটির সদস্য ও সিপিজিসিবিএল’র নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) মো. শহিদুল্লাহকে একাধিকার ফোনে ও খুদে বার্তায় মন্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করলেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৬ ঘণ্টা, ০৪ জুন ২০২৪
 

সৌজন্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।