ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গাবতলী হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি, দুশ্চিন্তায় বিক্রেতারা

মিরাজ মাহবুব ইফতি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৪
গাবতলী হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি,  দুশ্চিন্তায় বিক্রেতারা

ঢাকা: ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে দুই সিটি করপোরেশন মিলে হাট বসেছে প্রায় ২০টি।

তবে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়েনি। হাটে ক্রেতা থেকে গরু বেশি।  

বিক্রেতারা বলছেন, হাটে বড়, মাঝারি ও ছোট গরুসহ কোরবানির পর্যাপ্ত পশু আছে। তবে ক্রেতাদের সংখ্যা খুব কম। ক্রেতারা গরুর দাম কম বলছেন। উল্টো কথা বলছেন ক্রেতারা। বাজেট অনুযায়ী ছোট ও মাঝারি গরু দামে মিলছে না হাটে।

শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত গাবতলী পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকতেই বড় গরু চোখে পড়বে। এর পরে মাঝারি গরু মিলবে হাটের মাঝে। তবে ছোট গরু খুঁজতে হলে যেতে হবে গাবতলী হাটের শেষ দিকে। হাটে সব আকারের গরু আছে। তবে হাটে বেশি উঠেছে মাঝারি ও বড় গরু। এদিন হাটে ক্রেতাদের কম দেখা গেছে। হাটে এখনও ক্রেতা থেকে গরু বেশি।

মিরপুর ১২ নম্বর থেকে হাটে এসেছেন মো. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ২ ঘণ্টা ধরে মাঝারি আকারের গরু খুঁজছি। এখন আমার বাজেট বা সামর্থ্য অনুযায়ী গরু পাচ্ছি না। ব্যাপারীরা দাম বেশি চাচ্ছে। গতবারের তুলনায় এবার ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দাম চাইছে। ব্যাপারীরা গরুর দাম ধরে রেখেছে, দাম কামাচ্ছেন না।

মো. জুবায়ের দুই বন্ধু মিলে গাবতলী গরুর হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, তিন ঘণ্টা ধরে মাঝারি আকারের গরু খুঁজছি। দামে মিলছে না, তাই কিনতে পারছি না। গতবারের তুলোনায় এবার গরুর দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।  

মিরপুর পল্লী এলাকা থেকে হাটে এসেছেন মো. আফছার হোসেন। তিনি বলেন, আমি প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঘুরে ছোট গরুর থেকে একটু বড় একটা গরু কিনেছি। হাসিলসহ দাম পড়েছে ৮৪ হাজার টাকা। হাটে বিক্রেতারা ছোট গরুর দাম চাইছে লাখ টাকা। এবার মনে হচ্ছে গরুর দাম বেশি।

সিংগাইর থেকে গাবতলী হাটে মো. ইয়াকুব আলী গরু এনেছেন ৬টি। তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে এসেছি হাটে। এখন পর্যন্ত একটি গরু বিক্রি করতে পারেনি। আমার গরুগুলো মাঝারি আকারের। গরুর দাম এক লাখ ৪০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে। ক্রেতারা এক লাখ বা এক লাখ ১০ হাজার টাকার দাম বেশি বলছে না।  

তিনি বলেন, ক্রেতারা গরু বিক্রির দাম বলছে না। আজকে হাটে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। আশা করি শনিবার অনেক ক্রেতা আসবে। গো-খাদ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ায় গরুর দামও বেশি।

মানিকগঞ্জ থেকে ব্যাপারী মো. রাজ্জাক বৃহস্পতিবার গাবতলী আসেন। রাজ্জাক বলেন, আমি গতকাল হাটে আসলেও এখন পর্যন্ত কোনো গরু বিক্রি করতে পারেনি। ছোট আর মাঝারি আকারের দুইটি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। ছোট গরুটির দাম ১ লাখ টাকা আর মাঝারিটির দাম দেড় লাখ টাকা। ক্রেতারা বিক্রির দাম বলছে না। হাটে ক্রেতা অনেক কম আসছে। হাটে এখন ক্রেতা থেকে গরুর সংখ্যা বেশি।

যশোর থেকে পাঁচটি বড় গরু নিয়ে গাবতলী এসেছেন মো. হাসমত আলী। হাসমত বলেন, আমার সব বড় গরু। আমি এবার সাড়ে ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা দামের গরু নিয়ে এসেছি। ক্রেতারা বড় গরুর দাম ভালো করে বলছে না। হাটে বড় গরু কেনার ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। ভালো দাম না পেলে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ঈদের আর দুই দিন আছে। আমার মনে হয় গরুর ব্যাপারীদের ভাগ্য নির্ধারণ হবে চাঁদ রাতে। কেউ হাসবে, নয় তো কাঁদবেন। আল্লাহই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, ১৪ জুন, ২০২৪
এমএমআই/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।