ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ জুন ২০২৪, ১৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

মেরাদিয়া-শাহজাহানপুরে বড় গরুর দাম বেশি, ছোটগুলোয় আগ্রহী ক্রেতারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
মেরাদিয়া-শাহজাহানপুরে বড় গরুর দাম বেশি, ছোটগুলোয় আগ্রহী ক্রেতারা

ঢাকা: মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ উৎসব ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) সারা দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসব পালিত হবে।

ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত চলবে ঢাকার পশুর হাটগুলো। রোববার (১৬ জুন) শেষ দিনে রাজধানীর পশুর হাটগুলোয় বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

হাটে ভিড় থাকলেও পশুর সংখ্যা তুলনামূলক কম। শেষ দিনে গরুর দাম না কমায় ক্রেতারা হতাশ। তাই বড় গরুর চেয়ে ছোটগুলোতেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা।

সরেজমিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মেরাদিয়া বাজার হাট ও শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ মাঠে গরু-ছাগলের হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

শনিবার রাত পর্যন্ত শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ মাঠের হাটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কোরবানির পশু দেখা গেছে। ছোট-বড় সব মিলিয়েই কোরবানির পশু তুলেছিলেন ব্যাপারীরা। কিন্তু রোববার সকালে মাঠে গিয়ে দেখা যায় বড় গরু তেমন নেই। ছোট গরু থাকলেও খুব বেশি সংখ্যায় নেই। বিক্রেতারা বলছেন, গতকাল রাত পর্যন্ত হাটে বড় গরু ছিল। কিন্তু দামের কারণে ক্রেতারা সেগুলোয় আগ্রহ দেখাননি। তাদের পছন্দ ছোট গরু।

এ হাটে আসা ক্রেতারা জানিয়েছেন, বড় গরুর দাম খুব চড়া। অনেক ভিড় থাকায় বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে ক্রেতারা কাছে বেশি দাম চাইছেন। যে কারণে বড় গরুর কেনার আগ্রহ পাচ্ছেন না তারা। ছোট গরু কিনছেন।

শাহজাহানপুর হাটে দুদিন আগে আটটি বড় গরু নিয়ে এসেছিলেন ঝিনাইদহের মৌসুমি ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন। সবগুলোর দামই লাখ টাকার ওপরে। মাত্র তিনটি গরু বিক্রি হয়েছে। ক্রেতারা আগ্রহ হারানোয় বাকি পাঁচটি গরু বিক্রি করতেন পারছেন না আক্তার। সবগুলো বিক্রি না হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন, যে কারণে তিনি চিন্তিত।

কথা হলে আক্তার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছরই এলাকা থেকে গরু কিনে ঢাকায় এনে বিক্রি করেন তিনি। খাবারের দাম বাড়ায় এবার গ্রামেও গরুর দাম বাড়তি ছিল। লাখ টাকারও বেশি দামে তারা পাঁচজনে ৮টি গরু কিনেছিলেন। যেগুলো বিক্রি করেছেন, সেগুলোয় যে লাভ হয়েছে তাদের পোষাবে না। অবশিষ্টগুলো বিক্রি করতে না পারলে অল্প কিছু বেশি দামে কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেবেন। গ্রাম থেকে গরু নিয়ে আসতে যে ট্রাক ভাড়া লেগেছে, তাদের ক্ষতি হবে বেশি। রাতের মধ্যে গরুগুলো বিক্রি হবে বলে আশা করেন তিনি।

শাহজাহানপুর ঝিল মসজিদ এলাকার বাসিন্দা মো. সোহেল সরকার হাট থেকে ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে একটি ছোট গরু কিনেছেন। শেষ সময়ের গরুর বাজারের পরিস্থিতি কেমন দেখেছেন জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গরু শনিবার রাতেই কেনা হয়েছে। আজ আমার খালার জন্য কিনেছি। শেষ সময়ে বাজারে বড় গরু আছে ঠিকই; কিন্তু দাম অনেক। বড় গরুর ব্যবসায়ীরা এখন আফসোস করছে। কিন্তু সমস্যা ছোট গরু কম থাকায়। যাদের বাজেট কম তারা গরু পাচ্ছে না। যে গরুটা কিনলাম সেটা আরও কয়েকজন দামাদামি করছিল। এই বাজেটে হাটে আর গরু চোখে পড়েনি তাই ব্যাপারী যে দাম বলেছে সেটি থেকে আড়াই হাজার টাকা কমে কিনে নিয়েছি।

শাহজাহানপুর হাটের মাঠের পাশে হাসিল কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ক্যাশিয়ার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সকাল থেকে হঠাৎ গরু বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। এখন দেখছি হাট প্রায় খালি হয়ে যাচ্ছে। কলোনির শেষ মাথায় শুনলাম গরু নাই। এর আগের কয়েক বছর চাঁদ রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে পুরো হাট ফাকা হয়ে যেত, এবারও মনে হয় একই অবস্থা হবে।

মেরাদিয়ার মাঠেও পরিস্থিতি একই। বড় গরু তেমন নেই, থাকলেও দাম অনেক বেশি। ছোট ছোট যেসব গরু আছে, ক্রেতারা দামাদামি করে যে যেভাবে পারছেন কিনছেন। এক গরুর জন্য ৭-৮ জন একইসঙ্গে দামাদামি করছেন।

সোহাগ নামে এক ক্রেতা জানালেন, সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কয়েকটি গরু দামাদামি করে পাইনি। হাট প্রায় খালি। বড় গরুর দাম বেশি, কেনার সামর্থ্য নেই। ছোট গরু যা আছে, আরও না এলে ক্রেতায় ক্রেতায় কাড়াকাড়ি লাগবে।

আউয়াল নামে এক বিক্রেতা জানান, সকাল থেকে তিনটা গরু বিক্রি করেছেন। আরও দুটি আছে। বিকেলের মধ্যে বিক্রি করে ফেলতে পারবেন। হাটে ক্রেতা আছে, গরু নেই। ছোট গরু আরও চার-পাঁচটি নিয়ে এলে সেগুলোও বিক্রি হয়ে যেত।

মেরাদিয়া হাটের হাসিলদার বলেছেন, সকাল থেকে বিক্রি বেশি। শেষ দিন হওয়ায় ক্রেতা সংখ্যা বেড়ে গেছে। বড় গরুর চাহিদা নেই। হাটে বেশিরভাগ বড় গরুই রয়ে গেছে। ছোট গরুও প্রায় শেষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।