ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লাশ দাফনের ৫ দিন পর বাড়ি ফিরলেন নিখোঁজ তরুণী!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৪
লাশ দাফনের ৫ দিন পর বাড়ি ফিরলেন নিখোঁজ তরুণী!

ফরিদপুর: ফরিদপুরে সদরপুরে ‘মৃত্যুর’ ৫ দিন পর বাড়ি ফিরলেন হাসি আক্তার নামের এক তরুণী। আর ১০ মাস পর কবর থেকে তোলা হলো হাসি বলে দাফন করা মরদেহ।

 

ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবি গ্রামে।

জানা যায়, গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর হাসি আক্তার সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণপুর ইউনিয়নে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে সদরপুর বাজারে আসার উদ্দেশ্যে বের হন। সেই থেকে হাসিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

এ ঘটনায় হাসির বাবা শেখ হাবিবুর রহমান সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে লেখা হয়, তার মেয়ে হাসি আক্তারকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ।  

অন্যদিকে হাসির স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে গেছে।

ঘটনাচক্রে, গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা খালের কচুরিপানার ভেতর থেকে শনাক্তের অযোগ্য একটি অর্ধগলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে সেই মরদেহ হাসি আক্তারের বলে দাবি করে তার পরিবার। নিখোঁজ হাসি আক্তারের মা সালমা বেগম মরদেহ তার মেয়ে হাসির বলে শনাক্ত করেন। কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি নখ ছোট থাকায় মরদেহ হাসির বলে দাবি করেন তারা। ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া শেষে শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।

এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা থেকে হাসি আক্তার মোবাইল ফোনে তার পরিবারকে বলেন, তিনি জীবিত আছেন এবং ওই মরদেহ দাফনের ৫ দিন পর বাড়ি ফেরেন তিনি। এলাকাবাসীর ধারণা হাসি আক্তার পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে হয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। হাসি আক্তার ফিরে আসার পর জনমনে এক প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে তাহলে কবর দেওয়া ওই মরদেহটি কার?

এরপর ভাঙ্গা থানার মানিকদাহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াদ আলী দাবি করেন, মরদেহটি তার মেয়ের। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট ও সদরপুর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে রোববার দুপুরে দীর্ঘ ১০ মাস পর কবর থেকে মরদেহটি তোলা হয় এবং ডিএনএ টেস্টের জন্য মরদেহটির বিভিন্ন অংশের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুজ্জামান রিশাদ বলেন, আমরা কবর থেকে আজ রোববার মরদেহ উত্তোলন করেছি এবং সেখান থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেছি। ফরেনসিক বিভাগের তথ্য পাওয়ার পর জানা যাবে আসলেই এই বেওয়ারিস মরদেহটি ইয়াদ আলির মেয়ের মরদেহ কী না।

মরদেহ উত্তোলনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপ্ত চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ, ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. ইউনূস আলী, মানিকদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেকে। এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।