ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাগেরহাট সংঘর্ষে আহত ১৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
বাগেরহাট সংঘর্ষে আহত ১৫

বাগেরহাট: ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারকে পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ডাকা ‘অসহযোগ আন্দোলন’র সমর্থনে বাগেরহাটে প্রথমবারের মতো বিক্ষোভ হয়েছে।  

রোববার (৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাগেরহাট আদালত চত্বরের সামনের খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র-জনতা।

 

এ সময় তাদের ধাওয়া দেয় সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। এতে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে মহাসড়ক দখলে নেয় আন্দোলনের সমর্থনে থাকা ছাত্র-জনতা। তখন ক্ষিপ্ত আন্দোলনকারীরা ওই সড়কের পাশে থাকা স্থানীয় সেচ্ছাসেবক লীগের একটি কার্যালয় ভাঙচুর করে। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সরকারি দলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। প্রায় ঘণ্টা ধরে চলা ধাওয়া ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় তিন সাংবাদিক, তিন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।

আহত তিন সংবাদকর্মীরা হলেন- আব্দুল্লাহ আল ইমরান, শেখ সোহেল ও আবু তালেব। এর মধ্য ভিডিও চিত্র ধারণ করায় ইমরানের মোবাইলফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।

পরে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকে মিছিল করতে দেখা যায়। মিছিল থেকে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহতের স্লোগান দেওয়া হয়।

এদিকে, রমাপাল উপজেলার খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফয়লা এলাকায় মিছিল করেছে কোটা আন্দোলনকারীরা। সহস্রাধিক আন্দোলনকারীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য ও দুই সংবাদকর্মী আহত হন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুটি অফিসও ভাঙচুর করেন তারা।

রামপালে আহত সংবাদকর্মীরা হলেন- প্রেসক্লাব রামপালের সভাপতি সবুর রানা ও সাধারণ সম্পাদক সুজন মজুমদার।

প্রেসক্লাব রামপালের সভাপতি সবুর রানা বলেন, পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া ছবি তুলতে গেলে আন্দোলকারীরা আমার ক্যামেরা কেড়ে নেন। সুজন মজুমদার ও আমাকে মারধর করেন তারা। তাদের হামলায় রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমেন দাশ ও ওসি তদন্ত বিধান বিশ্বাস আহত হন।  

ওসি সোমেন দাশ বলেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। তাদের ছোড়া ইট আমার হাত ও পায়ে লেগেছে।

এছাড়া বিকেলে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ভাগা এবং ফকিরহাটের কাটাখালি মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন অসহযোগ আন্দোলন সমর্থনকারীরা। কাটাখালি এলাকা থেকে দুটি অ্যাম্বুলেন্সসহ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।

বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরদার আব্দুল কাদের বলেন, জামায়াত-শিবিরের লোকজন দলীয় অফিস ভাঙচুর করেছে। তাদের হামলায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শঙ্কর কুমার সাহা, বারুইপারা ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক জিলানী আহমেদ ও সদস্য মো. হাসান শেখ আহত হয়। দলের স্বার্থে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ মাঠে থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন এই নেতা।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আছাদুজ্জামান বলেন, মহাসড়কের ওপরে আন্দোলনকারীরা সমবেত হয়। এখানে আমাদের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় ও আদালত ভবন রয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা আগে থেকেই ছিলেন। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবেই তাদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।