বরিশাল: বরিশালে রূপাতলী বাস টার্মিনাল ও সংলগ্ন থ্রি হুইলার স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক গ্রুপের হামলায় অপর গ্রুপ ও থ্রি হুইলার চালকসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রূপাতলী বাস টার্মিনাল দখলে নেয় মহানগর বিএনপির একটি গ্রুপ। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাঁদা দিয়ে এ টার্মিনাল থেকে চলতো বাসও থ্রি-হুইলা। সরকার পতনের পর কয়েকদিন থ্রি হুইলারে চাঁদা আদায় বন্ধ থাকলেও শুক্রবার নতুনভাবে তা শুরু করা হয়।
থ্রি-হুইলার চালকরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুক্রবার রাতেই শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে চালকসহ ১২ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে সাতজনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে ১০টির মতো যানবাহন।
থ্রি-হুইলার চালকরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের আমলে একটি সিন্ডিকেট থ্রি-হুইলার চালকদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৭০ টাকা চাঁদা আদায় করতো। এছাড়া প্রতিটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ৮০ থেকে ১২০ টাকা চাঁদা নেওয়া হতো। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থ্রি-হুইলার চালকরা চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু বিএনপি নেতা কালাম চৌধুরি ও আব্দুর রাজ্জাকসহ তাদের বাহিনী টার্মিনালের প্রতিটি বাস থেকে প্রতিবার টার্মিনাল থেকে ছাড়তে ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে উত্তোলন করতে শুরু করেন। শুধু বাসই নয় তারা থ্রি-হুইলার থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেন। থ্রি-হুইলার চালকরা স্থানীয় ২৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাজীব মোল্লার নেতৃত্বে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপরই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তবে এসব অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন অভিযুক্তরা।
থ্রি-হুইলার চালক সাগর বলেন, ‘আমরা বিএনপি নেতা রাজীব মোল্লার মার্কেটের সামনে থেকে গাড়ি ছাড়ি। শ্রমিক ইউনিয়ন দখল করে নিজেকে শ্রমিক নেতা বলা কালাম, রাজ্জাক এসে চাঁদা চাইতো। আমরা বিষয়টি রাজীব মোল্লাকে জানালে তিনি চাঁদা না দিতে বলেন। আমরা চাঁদা দিতে অপারগতা দেখাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাতি কালামের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়।
মাহিন্দ্রা শ্রমিক মনির হোসেন বলেন, ‘নাতি কালাম, রাজ্জাক আমাদের এসে বলতো আগে আওয়ামী লীগকে চাঁদা দিয়েছো, এখন জিয়া সিকদার দায়িত্ব নিয়েছে। তার নেতৃত্বে বাস টার্মিনাল চলবে। তোমরা টাকা না দিলে সংগঠন চলবে কীভাবে?
রাজীব মোল্লা বলেন, ১২ জনকে মারধর করেছে। এরমধ্যে সাতজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আট থেকে ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা।
অভিযোগের বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কালাম চৌধুরী বলেন, শ্রমিকরা যোগ্য নেতৃত্ব চায়। তারা আমাকে শ্রমিক ইউনিয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর বিপরীতে কয়েকজন আরেকটি কমিটি গঠনের চেষ্টা চালিয়েছে। সাধারণ শ্রমিকরা শুক্রবার রাতে তাদের নিষেধ করে এসেছে। এছাড়া অন্য কোনো বিষয় আমার জানা নেই।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৪
এমএস/আরআইএস