ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নির্ধারিত সময় পেরোলেও পলক-শিমুলের অস্ত্র জমা হয়নি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪
নির্ধারিত সময় পেরোলেও পলক-শিমুলের অস্ত্র জমা হয়নি জুনাইদ আহমেদ পলক ও শফিকুল ইসলাম শিমুল

নাটোর: লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও নাটোরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র এখনও জমা পড়েনি।  

এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ায় তার দুটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং আত্মগোপনে থাকায় নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের দুটি, সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসের একটি ও ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের নামে লাইসেন্সকৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়েনি।

তবে এরই মধ্যে ঠিকাদার মো. আশফাকুল ইসলামের খোয়া যাওয়া লাইসেন্স করা অপর একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও ১১ রাউন্ড গুলি গত ০১ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে জেলা শহরের স্টেশনবাজার কারবালা মোড় এলাকার আবর্জনার স্তুপের ওপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জেলার সাতটি থানায় অন্যান্য ৮৯টি লাইসেন্সধারী অস্ত্র জমা পড়েছে।

ইতোমধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে নাটোর জেলা যুবলীগ সভাপতি মো. বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার জেলা শহরের কানাখালী এলাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি ভারতীয় ওয়ান শুটার গান ও দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি পিস্তল হোল্ডার এবং একটি অস্ত্রের সিলিং উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী।

নাটোর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফাত হুসাইন শুক্রবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, জেলায় বিভিন্ন সময়ে ৯৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার মধ্যে সেসব অস্ত্র জমা নিকটস্থ থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে জেলার সাতটি থানায় ৮৯টি অস্ত্র জমা হয়েছে। জমা দেওয়ার বাইরে আছে ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র। বিধি মোতাবেক এখন সেগুলো অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আর তাই সেগুলো উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময় ৩ সেপ্টেম্বর পার হলেও নাটোরের সাবেক দুই সংসদ সদস্য বা তাদের পক্ষে কেউ তাদের নামে লাইসেন্স করা শর্টগান ও পিস্তল থানায় জমা দেননি। এছাড়া সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসের একটি ও ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের নামে লাইসেন্সকৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেননি। ফলে তাদের হেফাজতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে ঘোষিত হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনী কাজ করছে।

এদিকে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি শিমুল, সিংড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস ও ঠিকাদার আশফাকুলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর নাটোরে এই দুই সংসদ সদস্যসহ তাদের সবার বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। বাড়িতে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত দুই সংসদ সদস্য ও তার স্বজনেরা নাটোর শহরে ফিরে আসেননি। এ ব্যাপারে তাদের পক্ষ থেকেও স্ব স্ব থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার আবেদন করা হয়েছে।

নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাছুদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে সভা করা হয়েছে। অভিযানে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও আনসার সদস্যরা থাকবে। জেলার লাইসেন্স করা অধিকাংশ অস্ত্রই থানায় জমা পড়েছে। যেসব অস্ত্র জমা পড়েনি, সেগুলোর উদ্ধারে যৌথবাহিনী মাঠে কাজ শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে, শিগগিরই এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।