ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘরে ঢুকে দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে হত্যা, প্রকৌশলীসহ ৩ জন আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
ঘরে ঢুকে দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে হত্যা, প্রকৌশলীসহ ৩ জন আটক

ঢাকা: রাজধানীর রামপুরার মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় ঘরে ঢুকে তানজিল জাহান ইসলাম তামিম (৩২) নামে এক যুবককে মারধর ও গলা টিপে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এক প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করেছে।

জানা গেছে, নিহত যুবক বেসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম দীপ্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই টিভি চ্যানেল সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালের দিকে রামপুরার মহানগর প্রজেক্টের চার নম্বর রোডের ডি-ব্লকের বাড়ির আট তলার একটি ফ্ল্যাটে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই লোকজন তামিমকে উদ্ধার করে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষার পর মৃত ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, নিজেদের জমিতে নির্মিত অ্যাপার্টমেন্টে ফ্ল্যাট পাওয়া নিয়ে ডেভেলপার কোম্পানি ও তামিমদের বিরোধ চলছিল।

তামিমের বাবার অভিযোগ, প্লিজেন্ট প্রোপার্টিস নামে ওই কোম্পানির কর্নধার শেখ রবিউল আলম রবির নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তিনি হাতিরঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আসা নিহত তামিমের মামা মাসুদ করিম জানান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন তামিম। যোগ দেন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগে। মহানগর প্রজেক্টের বাড়িটির ৭ তলায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন তিনি ও তার পরিবার।  

প্লিজেন্ট প্রোপ্রার্টিজ লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানি তাদের মোট পাঁচটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তামিমরা যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেটি বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে বছর খানেক আগে একটি মামলাও করা হয়।

মাসুদ করিম বলেন, বুধবার ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে তামিমদের একটি সমঝোতা হয়। আট তলায় দুটি ফ্ল্যাট তাদের দেওয়ার কথা জানানো হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে আট তলার ফ্ল্যাটে লেবার দিয়ে কিছু কাজ করাচ্ছিলেন তামিম৷ তখন হঠাৎ ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ মির্জা, তার সন্ত্রাসী বাহিনী ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা চালায়। তামিমকে মারধর করতে থাকে তারা। চিৎকার শুনে তামিমের বড় ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে আসলে তাকেও মারধর করে এক পর্যায়ে চলে যায় তারা। তখন জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চান ভুক্তভোগীরা। এর মধ্যে ভিষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মনোয়ারা হাসপাতালে। পরে পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়িটির জমির মালিক তামিমের বাবাসহ মোট তিনজন। তাদের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই বাড়িতে ঢোকেন প্লিজেন্ট প্রোপার্টিস নামে ডেভলপার কোম্পানির লোকজন। তাদের সঙ্গে বহিরাগত কয়েকজন ছিলেন।

তারা জমির মালিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তারা তামিমের বুকে কিল-ঘুষি দেন। এরপর তার গলা টিপে ধরেন।

তামিম অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের কয়েকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। হাতিরঝিল থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা এসে প্লিজেন্ট প্রোপার্টিসের প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করে নিয়ে যান।

ওসি সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, বিস্তারিত ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।