কুমিল্লা: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সালিশ বৈঠকে কুপিয়ে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর বাজারে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে মারুফ (১৯) নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। মারুফ উপজেলার মোচাগড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
নিহত রাজিব হোসেন (৩২) উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন- নবীপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন (৫০), তার ছেলে আক্তার হোসেন (৩০) ও জসিম উদ্দিন (৫৫)। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আহত আক্তারের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, তার ননদ নিলুফা বেগম উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের শিরিনা বেগম থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেন। ধারের টাকা দিতে না পারায় এই টাকার জন্য বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়। পাওনা টাকার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে তার ননদ ও স্বামীকে তুলে নেওয়ার জন্য শিরিন ৮-১০ জনের একটি দল নিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে আসেন। এসময় তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে নিয়ে নবীপুর বাজারে কামাল মাস্টারের অফিসে সালিশ বৈঠকে বসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সালিশ চলাকালে অফিসের বাইরে শিরিনা বেগমের সঙ্গে আসা মারুফ, মারফতসহ কয়েকজন আক্তারের স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে লাথি মেরে ফেলে দেন। এসময় রাজিব নামের একজন রাবেয়াকে রক্ষা করতে যান। এতে মারুফ, মারফত রাজিবের বুকে ও শরীরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। রাজিবকে বাঁচাতে এলে আক্তার হোসেন, তার বাবা মোজাফ্ফর এবং কাকা জসিম উদ্দিনকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন জানান, আমার ভাই ফার্নিচারের নকশার কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার বন্ধুর সঙ্গে সালিশ বৈঠক দেখতে যায়। সেখানে ঘাতকের হাত থেকে এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে ভাড়াটে খুনির হাতে নির্মমভাবে খুন হন। তিনি বিয়ে করেছেন তিন বছর। দুই বছরের একটি শিশু ছেলে আছে তার। আমরা এই হত্যাকারীসহ জড়িতদের ফাঁসি চাই।
এলাকার মাদবর কামাল মাস্টার বলেন, বিচার প্রায় শেষ। এমতাবস্থায় দুইজন অপরিচিত ছেলে ভেতরে ঢুকে। ধর বলে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেই আচমকা আক্রমণ করে। প্রথমে মনে হয়েছে কিল ঘুসি দিচ্ছে। তাৎক্ষণিক রক্তপাত দেখে লক্ষ্য করা গেছে ওর হাতে চকচকে ধারালো অস্ত্র। কিলার ভাড়াটে ও দুর্ধর্ষ তারা। তাকে আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক বলেন, হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৪
এসএম